DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

এখনও মাইনাস টু ফরমূলা বহাল তবে এবার টার্গেট বেগম জিয়া ও তারেক রহমান

 

khaleda bnpবিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং তার উত্তর সুরী তারেক রহমানকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার। এই জন্য খালেদা-তারেক  মাইনাস বিএনপিও করতে চাইছে সরকার। আর এই লক্ষ্যেই সরকার কাজও করছে। আর এই কাজে সরকারকেও বিএনপির কেউ কেউ সহযোগিতা করছেন। এরমধ্যে স্ট্যান্ডিং কমিটির একাধিক নেতার নামও রয়েছে।

সরকারের একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার পাশাপাশি তারেক রহমানকেও দেশে ফিরতে দিবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর সেটা কার্যকরও করা হবে। এতদিন সরকার তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে, গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হবে এমন পরিকল্পনা করলেও এখন আর সেটা চাইছে না। এখন তারা চাইছে তারেক রহমান যাতে করে কোনভাবেই দেশে ফিরতে না পারেন। কারণ তিনি দেশে ফিরলে পরিস্থিতি ভিন্ন রকমও হতে পারে। তার শাস্তি না হলে তিনি আবার রাজনীতিতেও সক্রিয় হয়ে উঠবেন। সেই সুযোগ সরকার তাকে দিবে না।


সূত্র জানায়, রোববার খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে দুদকের করা দুটি দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন বিচারক। ২৪ নভেম্বর জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্য নেওয়া হবে। মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের সাক্ষ্য দিবেন। রোববার ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় রোববার খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে আগামী তারিখ নির্ধারণ করেন। ঢাকার বকসিবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালত ভবনে এ দুটি মামলার বিচার চলছে।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুইজনই রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে। এই জন্য কতদিন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে সরকারের ওই সূত্র জানায়, সেটা আদালতই ঠিক করবে। কারণ বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় ফেঁসে যেতে পারেন আর তারেক রহমান দুর্নীতির মামলায় ও ২১ শে আগষ্টের গ্রেণেড হামলায় ফেঁেস যেতে। সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে ঠিক যতটা সহজ মনে করছেন ততোটা সহজ হচ্ছে না। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আইনজীবীরা চেষ্টা করছেন তাদের মামলার কাজ বিলম্বিত করার জন্য।

এছাড়াও তারা সব আদালতেও মামলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে উচ্চ আদালতে লড়াই করছেন। সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়া রোববার দুই মামলায় হাজিরা না দিলে দুদকের আইনজীবী তার গ্রেপ্তারী পরোয়া চাওয়ার প্রস্তুতি রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি গ্রেপ্তারী পরোয়ানা এড়াতে আদালতে হাজির হন। এই মুহুর্তে কোন গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী হোক সেটা তিনি চাইছেন না। পরোয়ানা জারী হলেই সমস্যায় পড়ে যাবেন। কালন সরকারের টার্গেট রয়েছে তাকে গ্রেপ্তার করে অন্তরীণ রাখা। বিএনপির পুরোপুরি আন্দোলন থামিয়ে দেওয়া।

সূত্র জানায়, বেগম খালেদার আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে এ দুটি মামলার বিষয়ে লিভ টু আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে বলে আদালতকে অবহিত করেন। সেই কারণে বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ ঠিক করেন। এদিকে দুদকের বাদী হারুন অর রশিদ সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক খালেদার আবেদন মঞ্জুর করার কারণে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেনি আদালত। সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের এ দুটি মামলা চলছে।

বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ন নেতা বলেন, সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন ও তারেক রহমানকে মামলায় শাস্তি দেওয়াতে চাইছেন বলেই তড়িঘড়ি করে মামলার বিচার শেষ করতে চাইছেন। সুযোগ পেলে গ্রেপ্তারও করবেন। সেটা আওয়ামী লীগের নেতারা বার বার বলেছেন। চেষ্টাও করছেন। কিন্তু সেটাতো আমরা হতে দিতে পারি না। আমাদের নেত্রী ও নেতার বিরুদ্ধে মামলা চলবে। আর আওয়ামী লীগের নেতা হলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। সেটা ঠিক নয়। দুদকের আচরনে আমরা সুন্তুষ্ট নই। তারাও দ্বিমুখী আচরণ করছে। সরকারের কথা মতো চলছে।

এদিকে এটা বুঝতে পেরেই খালেদার পক্ষের আইনজীবীরাও বিভিন্ন কোশল বের করছে। তারা বিচার কাজ বিলম্ব করার জন্য সব চেষ্টাই করছেন। এই ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন ও সানাউল্লাহ মিয়া কাজ করছেন। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর এ দুটি মামলায় আদালতে হাজিরা দেন খালেদা জিয়া। এরপর কয়েক দফা তারিখ থাকলেও তিনি নিরাপত্তারহীনতা ও উচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য থাকায় এই কারণ দেখিয়ে সময় নেন।

তবে ২২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন আদালত মঞ্জুর করেনি। তা নাকচ করে তার অনুপস্থিতিতেই একটি মামলায় বাদীর আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এ দুটি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে আদালত। এই দুটি মামলা হয় ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে। এর মধ্যে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জন , জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরো তিনজন আসামি রয়েছেন। দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে যান। তবে তা খারিজ হয়ে যায়।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মামলা বিলম্ব করার জন্য যতই চেষ্টা করুক না কেন কোন লাভ হবে না। সরকার পক্ষও লড়বে।

সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পূত্র তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস হতেই হবে। তিনি আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও জনগনকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য বলছেন তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শখ নেই। আসলে তিনিতো ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই এত কিছুটা করছেন।

নাহলে এত কিছু কেন করবেন। তাঁকে মাইনাস করার জন্য বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা কাজ করছেন বলে শোনা যায় এই ব্যাপারে ওই মন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাদের কি অবস্থা এটা সবাই জানেন। এনিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।

বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির একজন নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মাইনাস করার জন্য সরকারের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি  বিএনপির চেয়ারপারসন হতে চান এটা ঠিক কিনা এই ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, অনেক কথাই শোনা যায়। তবে আমি কারো নাম বলতে চাই না। সময়ই বলে দিবে। এদিকে ওই নেতার ব্যপারে বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তিনি অনেক কিছুই করেছেন এবং করছেন। আমরা সব জানি তবে সেটাকে রাজনৈতিক আলোচনায় আনতে চাই না। দলের ভেতরে শত্র“ রয়েছে এটা দলের জন্যই সমস্যা। তবে তাকে এখন কোন ধরনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন জানানো হচ্ছে না। তিনি দলীয় ব্যানার ব্যবহার করে কোন অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না এবং বক্তৃতা করতে পারবেন না বলে তাকে আপাতত সব কিছু থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে বিএনপির আগামী দিন গুলো মোটেই মসৃন হবে না।সরকারের গভীর ষঢ়যন্ত্র,ঘরের শত্রুদের অপতৎপরতা মোকাবেলা করেই দলকে   এগিয়ে নিতে হবে বেগম জিয়াকে।মনে রাখতে বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগনের একমাত্র আশা-ভরসার স্থল হিসাবে বিএনপিকে অবশ্যই টিকে থকতে হবে স্ব-মহিমায় এবং স্বগৌরবে।

 

 

 

 

 

 

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!