DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাঃ স্কটিশ নাগরিকদের চোখ রাঙ্গাচ্ছেন বিশ্বনেতারা

imagesMXVVJ6C7যুক্তরাজ্যের ভেঙ্গে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে এতদিন নিজ নিজ প্রতিক্রিয়া আড়ালে রেখেছিলেন বিশ্বনেতারা। কিন্তু যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই প্রকাশ পাচ্ছে তাদের মনোভাব।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের বিস্ময় লুকিয়ে রাখতে পারেননি ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। অবশ্য পরবর্তীতে দক্ষ কূটনীতিকের মতো নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন তিনি। সুষমা স্বরাজের মতে, স্কটল্যান্ডের জনগণই ঠিক করুক, তারা যুক্তরাজ্যের সাথে থাকবে না কি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

তবে অন্য বিশ্বনেতারা যুক্তরাজ্যের ভেঙ্গে যাওয়াটাকে এত সহজে দেখতে চাইছেন না। কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার স্কটল্যান্ডের জনগণকে স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি স্কটল্যান্ডের নাগরিকদেরকে কুইবেকের দৃষ্টান্ত স্মরণ করিয়ে দেন। কুইবেকের জনগণ ১৯৯৫ সালে কানাডা থেকে স্বাধীন হওয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াটা কখনই রাজনৈতিক সমাধান হতে পারে না। কিভাবে কানাডার সরকার ব্যবস্থা থেকেই নিজেদের সমস্যার সমাধান করা যায়, তা খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি এবটও স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রস্তাবটির সমালোচনা করেছেন। তিনি এই স্বাধীনতা প্রস্তাবকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। মূলতঃ স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার ফলে তাদের নিজস্ব মুদ্রার মূল্যমান কমে যাওয়ার শঙ্কাটিই টনি এবট তুলে ধরেন। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, স্কটল্যান্ড চাইলে নিজেদের নতুন মুদ্রা চালু করতে পারেন। যার মাধ্যমে নিজস্ব মুদ্রার অবমূল্যায়ন রোধ করা যাবে।

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র পল ক্রুগম্যান। তিনি রীতিমত অবমাননাকর মন্তব্যই ছুঁড়ে দিয়েছেন স্কট নাগরিকদের প্রতি। তিনি বলেন, ‘স্কট! এরা আবার কারা? স্বাধীনতা প্রস্তাব নিয়ে আসলে স্কটদের আনন্দিত না হয়ে ভয়ই পাওয়া উচিত’।

লন্ডনে সর্বশেষ সফরে এসেও বারাক ওবামা স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেন, আমি যুক্তরাজ্যকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হিসেবেই দেখতে চাই। যদিও এই প্রসঙ্গটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকরা নিজেদের মতামত প্রকাশ না করার নীতিই পালন করে এসেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রস্তাবের সমালোচনা করছেন কিছুটা ঘুরপথে। ব্রাসেলসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলেও সহজেই তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পেয়ে পাবে না।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জোসে এল বারোসো বলেন, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রস্তাব পাস হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদ পাওয়া তাদের জন্য কঠিন হতে পারে। কেননা, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে উসকে না দেওয়ার পক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

একারণেই স্পেন ও অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্র কসভোকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তাই, স্কটল্যান্ডের জনগণ ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারলেও সমস্যার সমাধানের জন্য অনেক কাঠখড় পোহাতে হবে। তবে, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে এখনও কোন অবস্থান নেয়নি জার্মানি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!