DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতিঃ সাত খুন মামলার সাক্ষীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়!

image_93030_0নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাত খুনের মামলার প্রতক্ষ্যদর্শী সাক্ষী এইচএম জামালউদ্দীনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে অপহরণকারীরা।

সেই সঙ্গে মারধর করে সাদা স্টাম্পে টিপসই নিয়ে নারায়ণগঞ্জ নতুন কোর্টের সামনে ফেলে রেখে গেছে। এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে হুমকি দেয়া হয়েছে প্রাণনাশের।

সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে মামলা দায়েরের জন্য আবেদন করেছেন অপহরণের শিকার মাসদাইর এলাকার মৃত মজিবুল হকের ছেলে জামালউদ্দীন।

গত ২৩ মে অপহরণ করার পরদিন ভোরে জামালউদ্দীনকে নতুন কোর্টের সামনে ফেলে রেখে যায়। এরপর তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা নিয়ে তিনি আদালতে আসেন। তবে আদালত এ ব্যাপারে এখনও কোনো আদেশ দেননি।

আবেদন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টায় সিদ্ধিরগঞ্জ জালকুড়ি কড়ইতলা এলাকা হতে জামালউদ্দীন অপহৃত হন। সিএনজি অটোরিকশায় করে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় নাকে রুমাল চাপলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে চোখ খুলে দেখতে পান অজ্ঞাতস্থানে সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি এলাকার মিজানুর রহমান, জমিসউদ্দীন, আব্দুর রব, দুলাল কাণ্ডারী, আব্দুল লতিফ, আলমগীর, নজরুল, আবুল হাসেম, বশির, মোবারককে দেখতে পান। তারা তাকে মারপিট করে।

এরপর রাত ১২টায় জামালউদ্দীনের স্ত্রী মাসুদাকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না হলে তাকে মেরে ফেলা হবে জানিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাৎক্ষণিক মাসুদা বেগম স্বামীকে বাঁচাতে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে জেলা পরিষদের সামনে এসে অপহরণকারীদের হাতে তুলে দেন। পরে তারা জানিয়ে যায় ২/১ ঘণ্টার মধ্যে তার স্বামীকে ফেরৎ দেয়া হবে।

ভোর ৪টার দিকে নতুন কোর্টের সামনে জামালউদ্দীনকে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। কাউকে না জানাতেও হুমকি ধামকি দিয়ে যায়। এর আগে তারা জামালউদ্দীনের কাছ থেকে দেড়শ’ টাকা মূল্যের অলিখিত স্টাম্পে জোর করে টিপসই নেয়।

জামালউদ্দীন নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার জন্য আবেদন করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর র‌্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর আরিফ হোসেন ও নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে ২৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

এর আগে মামলার প্রধান আসামি গডফাদার নূর হোসেনের দেয়া ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাব-১১ এর সিওসহ অন্যরা ৭ জনকে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নিহত নজরুল ইসলামের পরিবার।
 
নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও তার বাবা (নজরুলের শ্বশুর) শহীদুল ইসলাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে র‌্যাবের বিরুদ্ধে পরে লিখিত অভিযোগ দেন।

গত ১২ মে সাত খুনের এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের গণশুনানি শুরু হয়। সাক্ষ্য প্রদানের জন্য শতাধিক ব্যক্তি নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে সাক্ষ্য। এ গণশুনানির প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন জামালউদ্দিন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!