DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ভারতে বিজেপির বিপুল জয়ে আওয়ামী লীগ নার্ভাস : মির্জা ফখরুল

Fukrul-Islam-Alomgirভারতের লোকসভা নির্বাচনে সে দেশের জনতা পার্টির (বিজেপি)বিশাল  বিজয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ‘নার্ভাস’ হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, বিজেপির জয়ে বাংলাদেশের মানুষ ও বিএনপি নাকি উল্লসিত। কোথায় দেখছেন এই উল্লাস? আমরা তো উল্লসিত নই, বরং আপনারাই নার্ভাস হয়ে নানা কথাবার্তা বলছেন। নার্ভাস না হলে কেন এত কথাবার্তা বলছেন?’

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ফারাক্কার লংমার্চের ৩৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘ভারতের কঠোর পানি আগ্রাসনের কবলে বাংলাদেশ: পরিত্রাণের উপায় ও আশু করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

শনিবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক সভায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিজয়ে বাংলাদেশে যারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে তাদের ‘আহাম্মক’ বলে অভিহিত করেন।

এর জবাব দিতে গিয়ে ফখরুল মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বিএনপি তো কিছু বলছে না। আপনারা এত নার্ভাস হয়ে গেছেন কেন? আপনারা কি ভয় পেয়েছেন?’ আপনাদের কথাবার্তায় এটা পরিষ্কার যে ভারতের নির্বাচনের ফলে আওয়ামী লীগ খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছে। ভারতের নির্বাচনের ফলে বাংলাদেশের মানুষের উল্লসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

তিনি বলেন, মোদি এসেছে, কংগ্রেস নেই, আওয়ামী লীগ থাকবে না— এ ধরনের কথা বলছেন অনেকেই। যারা এ সব বলছেন, তাদের বলতে চাই, গণতন্ত্র সম্পর্কে সামান্য ধারণা থাকলে এটা বলতে পারেন না। যারা এগুলো বলেন, পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে তাদের বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। তিনি বলেন, ‘শুধু পানি নয়, বাংলাদেশ বহুমুখী আগ্রাসনের শিকার। আকাশ সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সর্বশেষ রাজনৈতিক আগ্রাসনেরও শিকার।

এ জন্য ভারতকে দোষারোপ করে লাভ নেই। কারণ তারা তাদের স্বার্থে কাজ করছে। আমাদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার জন্য আমরা এখনও সত্যিকার অর্থে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে পারিনি। কারণ আমাদের মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী কিছু চিন্তা আছে। যেগুলো এই আগ্রাসনকে সমর্থন করে। যারা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চায়, তাদের মাথা ভেঙে দেয়া হয়।’ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ভারত প্রতিবেশী দেশ।

তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক চাই। আমরা আশা করি, আজকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার কথা অনুধাবন করে অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবে। তিনি বলেন, সরকারের ‘নতজানু ও দাসসুলভ’ নীতির কারণে বাংলাদেশের পানি সমস্যার সমাধান আনতে পারেনি। তারা সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি।

কারণ এ সরকার ভারতের ওপর নির্ভরশীল একটি সরকার। উজানে ৫৪ নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করে ভারতে বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। গুম-খুনের জন্য সরকারকে অভিযুক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর সারা জাতি সোচ্চার হয়েছে।

এ রকম ঘটনা কেবল নারায়ণগঞ্জে নয়, গত তিন বছর ধরে সারাদেশে হয়ে আসছে। বিরোধী দলকে নির্মূলের করার জন্য সরকার পরিকল্পিতভাবে র্যাবকে ব্যবহার করে এ সব ঘটনা ঘটিয়েছে। বিরোধী দল ও মতের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। সরকারের এসব অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এএইচএম কামরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) সভাপতি খোন্দকার গোলাম মূর্তজা, ইসলামিক পার্টির সভাপতি আবদুল মোবিন, মহাসচিব এম এ রশীদ প্রধান, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, মুসলিম লীগের মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আলমগীর মজুমদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!