DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা!

AL-logojamat-logo

 

দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ  দেশের রাজনৈতিক মহলে আবারো গুঞ্জন উঠেছে, সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতার চেষ্টা চলছে। দলটির নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল বিভাগের রায়কে ঘিরেই এমন গুঞ্জন উঠেছে।

মিডিয়ার সঙ্গে জামায়াত নেতারা যোগাযোগ না রাখায় এই গুজব-গুঞ্জনের ডালপালা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। জোটের প্রধান শরিক বিএনপিও অনেকটা অস্বস্তি বোধ করছে এই গুঞ্জনে। সরকারও এ বিষয়ে কোনো কথা বলছে না। খবর : নতুন বার্তা গণজাগরণ মঞ্চকে থামিয়ে দেয়ার পেছনে হেফাজত ও জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

বিশেষ করে হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতার পরেই গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ইমরান এইচ সরকারকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সংবাদপত্রে অসংখ্য প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিষয়টি নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ যাতে 'বাড়াবাড়ি' না করতে পারে, সেজন্যই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। আর এতে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার পথটি সুগম হতে পারে বলে সরকার পক্ষের ধারণা।

তবে সম্ভাব্য মধ্যবর্তী নির্বাচনকে ঘিরে নীরবে কিছু একটা হচ্ছে বা চেষ্টা চলছে_ এমন ধারণা অনেকের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অতি গোপনে অভিযুক্ত জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। আর এতে তারা বিদেশিদের সহায়তা নিচ্ছে।

জামায়াতকে 'ম্যানেজ' করতে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। আর জামায়াতের পক্ষে কাজ করছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। তিনি এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না বলে জানা গেছে। কারণ, রাজ্জাক বাইরে যাওয়ার পরদিন ১৮ ডিসেম্বর কলাবাগান থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে দেশের বাইরে গেলেন_ এমন প্রশ্ন সবার।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাককে বাইরে যেতে সহযোগিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী এবং একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত। ওই রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে করেই তিনজন এয়ারপোর্টে যান।

রাজনৈতিক অঙ্গনে চাউর রয়েছে, '৮৬-এর নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে কিনা। ওই নির্বাচনে বিএনপি যায়নি, কিন্তু জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়ে এরশাদকে বৈধতা দিয়েছিল।

১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর জামায়াত বিএনপির সঙ্গে দুটি মহিলা এমপি 'পুরস্কার' নিয়ে অবস্থান করলেও অল্পদিনের মধ্যেই তারা রাস্তায় আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়। তারাই কেয়ারটেকারের ফর্মুলা দিয়ে তা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে জোরপূর্বক বাস্তবায়ন করে। আওয়ামী লীগ-জামায়াত সমঝোতা নিয়ে সর্বমহলে তোলপাড় চলছে।

তবে জামায়াতের তরুণ প্রজন্ম বিষয়টিকে মোটেই ভালোভাবে দেখছে না। তারা বলছে, যে আওয়ামী লীগের কারণে দলের শীর্ষ নেতারা মিথ্যা অভিযোগে কারারুদ্ধ, একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পুলিশ দিয়ে হত্যা-গুম-পঙ্গু করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা নয়।কিন্তু জামাতের প্রধান  অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি তাদের শতাধিক লাভজনক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো  বাচানোর চিন্তাও জামাতকে করতে হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারনা।

জামাতের তরুন প্রজন্ম  রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে  ইচ্ছুক। তবে বিএনপির আশঙ্কা, যদি আওয়ামী লীগ-জামায়াত সমঝোতা হয়, তাহলে সেটা হবে মূলত বিএনপিকে বাইরে রেখে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচন করার নীলনকশার সমঝোতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জানান, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের অাঁতাত বা সমঝোতা নতুন কিছু নয়। ক্ষমতার লোভে আওয়ামী লীগ পারে না_ এমন কোনো কাজ নেই। ঠিক একইভাবে নিজেদের প্রয়োজনে জামায়াতের পক্ষে কোনো কিছুই করা অসম্ভব নয়। তাদের অতীত বিশ্লেষণ করে সতর্কতার সঙ্গে সামনের দিকে এগোচ্ছে বিএনপি। কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, জামায়াত আপাতত সরকার বিরোধী আন্দোলনের কথা ভাবছে না।

বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে অভাবনীয় বিজয়ের পর জামায়াত নতুন করে দল সাজানোর কথা ভাবছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির চেয়ে এগিয়ে থাকার বিষয়টিকে জামায়াত নিজেদের শক্ত অবস্থান হিসেবে ভাবছে। জামায়াত মনে করছে, বিএনপির দ্বারা আন্দোলন হবে না। তাই আগ বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি ক্ষয়ের কোনো মানে হয় না। এ ব্যাপারে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!