DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

অবশেষে রিজওয়ানার স্বামীকে উদ্ধার করেছে পুলিশঃপরিবারের স্বস্তি,মোটিভ এখনও রহস্যাবৃত

image_86918_0
.

 

 

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবু বকর সিদ্দিককে বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

 

 

রাজধানীর কলাবাগান মাঠের পাশে পুলিশের চেকপোস্ট থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  প্রথমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ধানমণ্ডি থানার ডিউটি অফিসার এএসআই আলী হোসেন। তিনি বলেন, ‘আবু বকর সাহেব সুস্থ আছেন। রিজওয়ানা হাসান ও তার আত্মীয়রা থানায় এসেছেন। ওসি স্যারের রুমে তারা অবস্থান করছেন।’

উদ্ধারের পর সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  বলেন, ‘ওকে (এবি সিদ্দিক) দুর্বৃত্তরা মিরপুরে নামিয়ে দিয়ে গেছে। নামানোর আগ পর্যন্ত তার চোখ খোলা হয়নি। পরে সে নিজেই চোখের বাঁধন খুলেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সে একটা রিকশা নিয়ে মিরপুর দশ নম্বর এসেছে। সেখান থেকে সিএনজি করে বাসায় ফিরছিল, পথে পেট্রোল পুলিশ তাকে থামিয়েছে। তার শার্ট ছেড়া দেখে পুলিশ তার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় পেয়ে তাকে তাৎক্ষণিক থানায় নিয়ে যায়। এখন আমি ওকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।’

রিজওয়ানা জানান, এবি সিদ্দিক সুস্থ আছেন। তবে চোখ বেঁধে রাখার কারণে সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। আগামীকাল তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

নিজের অনুভুতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও আমি এবং আমার পরিবার কৃতজ্ঞ। কারণ তিনি নিজ উদ্যোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।’

‘কী উদ্দেশ্যে তাকে অপহরণ করা হয়েছে’ এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘তাকে কোনো টর্চার করা হয়নি। তবে এক সেকেন্ডের জন্যও চোখ খোলা হয়নি।  কী উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছে সেটা জানা যায়নি। গণমাধ্যম ও রাষ্ট্রের প্রচণ্ড চাপে পড়ে তাকে ছেড়ে দেয়া ছাড়া অপহরণকারীদের আর কোনো উপায় ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমি ওর (এবি সিদ্দিক) কাছ থেকে শুনে বুঝতে পেরেছি অপহরণকারীরা বিষয়টি ডার্ক রেখে দিয়েছে। এখন পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।’
 
তিনি আবারো আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। আনন্দের কোনো ভাষা নেই। আল্লাহ তায়ালার কাছে শোকরিয়া। সমগ্র দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। তাকে উদ্ধারের বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।’

রিজওয়ানা জানান, এবি সিদ্দিক সুস্থ আছেন। তবে চোখ বেঁধে রাখার কারণে সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। আগামীকাল তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে ধানমণ্ডি থানার ওসি আবু সালেহ মো. মাসুদ জানান, কলাবাগান মাঠের কোণায় রাত দেড়টার দিকে তাকে পাওয়া যায়।

ফতুল্লা থানার ওসি আক্তার হোসেন দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  বলেন, ‘আবু বকর সিদ্দিককে পাওয়া গেছে এমন খবর পেয়ে আমরা ধানমন্ডি থানায় যাই।’

রমনা বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার সরদার মারুফ হোসেন বলেন, ‘অপহরণকারীরা চোখ বাঁধা অবস্থায় সিদ্দিককে মিরপুর এলাকায় ফেলে যায়। সেখান থেকে তিনি রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। পুলিশ সিএনজি থামিয়ে পরিচয় জানতে পাওয়ার পর তাকে থানায় নিয়ে যায়।’

এদিকে থানায় আবু বকর সিদ্দিককে মুক্তির আনন্দে হাসিমুখ দেখা গেলেও তার চোখ দিয়ে বার বার পানি ঝরছিল। তবে তিনি বেশি কথা বলতে পারছিলেন না।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘মিরপুরে আমাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। সঙ্গে তিনশ টাকাও দিয়ে দেয় ভাড়ার জন্য। বাঁধন খোলার পর অনেকটা সময় লাগে আমার দৃষ্টি পিরে পেতে। কারণ অপহরণের পর আর চোখের বাঁধন খোলা হয়নি। পরে সেখান থেকে রিকশায় এবং সিএনজিতে করে আসি।’

যে সিএনজিতে করে আবু বকর সিদ্দিক আসছিলেন তার চালক হাসিবুল বলেন, ‘ওনি রিকশায় মিরপুর ১০ নম্বর থেকে আসছিলেন। পরে আমার সিএনজি দেখে হাত দিয়ে সিগন্যাল দেন। আমাকে বলেন তিনি সেন্ট্রাল রোড যাবেন। আমি তাকে নিয়ে কাজীপাড়া থেকে সেন্ট্রাল রোড আসছিলাম। পথে কলাবাগান চেকপোস্টের পুলিশ গাড়ি থামায়। সেখান থেকেই ওনাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।’

আসার পথেই আবু বকর সিদ্দিক চালককে অপহরণের বিষয়টি বলেন বলেও তিনি জানান। তবে আগে থেকে আবু বকর সিদ্দিকের অপহরণের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, বুধবার বিকেল সোয়া ৩টায় আবু বকর সিদ্দিক তার প্রাইভেট কারে করে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। ফতুল্লার ভূইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে আসা মাত্র পেছন দিক থেকে একটি নীল রঙের হাইয়েস মাইক্রোবাস দিয়ে তার গাড়িতে ধাক্কা দেয়া হয়। এ সময় গাড়ি থামিয়ে আবু বকর ও তার গাড়ি চালক নেমে এলে ওই গাড়ি থেকে ৭ থেকে ৮ জন যুবক লাঠিসোটা ও অস্ত্রের মুখে এবি সিদ্দিককে তুলে নিয়ে যায়।

 

 

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!