DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

মা-মেয়ে খুনঃ সন্দেহের তীর জবরদস্তির প্রেমিকের দিকে

image_83310নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েসহ মাকে পায়ের রগ কেটে, কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার রহস্যের কোনো কুল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো নিশ্চিত করে খুনের কারণ উদঘাটন ও খুনিকে শনাক্ত করা যায়নি।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রায়হান নামক এক যুবক ও আটক বাড়ির দুই নিরাপত্তারক্ষীকে সামনে নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (ডবলমুরিং) হাসান মোল্লা।

সোমবার সকাল ১১টায় পুলিশ নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর সড়কের ১২৯ নম্বর যমুনা নামের একটি ভবনের চতুর্থ তলা থেকে হাত-পায়ের রগ কাটা মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রেজিয়া খাতুন (৫০) ও মেয়ে সায়মা নাজনীন (১৬)। পরে চমেক হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রেজিয়া নগরীর ধনিয়ালাপাড়া এলাকার এফএন টেডিং করপোরেশন নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক রেজাউল করিমের স্ত্রী। মেয়ে সায়মা নাজনীন এবার আগ্রাবাদ সিডিএ গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

এদিকে পুলিশ খুনের রহস্য উদঘাটনে নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও বাড়ির দুই নিরাপত্তাকর্মী রাশেদ (২৮) ও হাবিবকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তবে নিহতের পরিবারের সন্দেহের তীর আগ্রাবাদ শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা ও ইউএসটিসির বিবিএর ছাত্র রায়হানের দিকে।

সায়মার বড় ভাই সাইফ রেজা অভিযোগ করেন, রায়হান তার বোনকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করতেন। তার বোন তাদের কাছে বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে অভিযোগ করেছে। কিছুদিন আগে রায়হান সাইফকে রাস্তায় পেয়ে বলেন, ‘তোমার বোনকে আমি ভালোবাসি’। এসময় সাইফের সঙ্গে রায়হানের কথা কাটাকাটি হয়। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার সকালে রায়হান সায়মার বাসার সামনে এসে চিৎকার করে তাকে ডাকতে থাকেন। এসময় বাবা রেজাউল করিম বের হয়ে রায়হানকে গালি দেন। রায়হান অপমানিত হয়ে সেখান থেকে চলে যান। রায়হানই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি পরিবারের।

এদিকে নিহত সায়মার বান্ধবী সেলিনা আক্তার সূচি বলেন, ‘সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমি সায়মাকে ডাকতে তার বাসায় আসলে বারবার কলিংবেল টেপার পরও দরজা না খোলায় দরজায় ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে দু’জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিয়ে উঠি। ওইসময় ঘরের মোবাইল ফোন বেজে উঠলে তা রিসিভ করে সায়মার বাবাকে ঘটনা সম্পর্কে আমি জানায়। সায়মার মা রাজিয়া খাতুন তখনও বেঁচে ছিলেন এবং ঘাতকের নাম ‘রায়হান’ বলে জানান।’

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং) হাসান মোল্লা বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে রায়হানকে যেহেতু সন্দেহ করা হচ্ছে এবং সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। এছাড়া আটক দুই নিরাপত্তাকর্মীকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তাদের কাছ থেকে এখনো নির্দিষ্ট কোনো কিছু জানা যায়নি তাই নিশ্চিত করে আমরা কিছুই বলতে পারছি না।’

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে এ খুনের ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে এখন সব বলা যাচ্ছে না। পরিবারের পক্ষ থেকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তাকেও তদন্তের স্বার্থে আমরা আটকে চেষ্টা করছি।’

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘একাধিক খুনি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। খুনিরা পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র (ছোড়া) দিয়ে তাদের এলোপাতাড়ি জখম করে খুন করেছে।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!