DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

শূন্যতার আগুনে পুড়ছেন এরশাদঃ

image_781_113159চলমান উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দুই দফায় জাতীয় পার্টি মাত্র দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়ে কোনো মতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। কিন্তু তৃতীয় দফায় সেই সান্ত্বনাও মেলেনি। এ দফায় একেবারে শূন্যহাতে অসহায় আত্মসমর্পণ এ নিয়ে শুধু দল নয়, খোদ দলটির চেয়ারম্যান এবং উপজেলা পদ্ধতির প্রবক্তা এরশাদও শূন্যতার আগুনে পুড়ছেন। এরশাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে এরশাদের এক ধরনের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু তার সে আশা পূরণ হয়নি। উল্টো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়ে।

বিশেষ করে স্ত্রী রওশনের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে সরাসরি দ্বন্দ্বের কারণে দলের বিভাজন স্পষ্ট হয়ে পড়ে। এ কারণে তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্র থেকে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা পায়নি। যে যার মতো করে প্রার্থী হয়েছেন। তবে প্রথম ধাপে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ দলের ১১ প্রার্থীকে সরাসরি সমর্থন দিয়ে মাঠে নামিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন মাত্র চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। দ্বিতীয় দফায়ও একজন চেয়ারম্যান হন। তৃতীয় দফায় ৮১টি উপজেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের কয়েক উপজেলায় তিন পদেই জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু কোনো উপজেলাতেই দলটির কেউ পাস করতে পারেনি। তাই আগের দুদফায় অন্তত একজন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দলের মান রক্ষা করলেও এবার একেবারে শূন্যহাতে ফেরায় দলের চেয়ারম্যান এরশাদের কষ্টের মাত্রা বেড়ে গেছে বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর এত তাড়াহুড়ো করে উপজেলা নির্বাচন হবে এটা তারা ভাবতে পারেননি। সেজন্য এ নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি। নির্বাচনের ফল নিয়ে দলের চেয়ারম্যান এরশাদের মনোভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, দুঃখ তো কিছুটা থাকবেই। পাশাপাশি অনুশোচনাও হচ্ছে। এখন দলের নেতাদের এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, উপজেলা নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রস্তুতির দরকার ছিল। কিন্তু অদৃশ্য অনেক কারণের জন্য সে প্রস্তুতি নেয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা টিমের আহ্বায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে জানান, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে কিছুটা ধোঁয়াশা থাকায় এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি। তবে অনেকেই যে যার অবস্থানে থেকে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু কারো পাসের খবর শোনেননি। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দলের ফলাফলে স্যার (এরশাদ) নিজেও হতাশ। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংগঠনের ধোঁয়াশা না কাটছে, ততক্ষণ পর্যন্ত দলের কার্যক্রম হয়তো এভাবেই চলবে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এরশাদের গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক সচিব সুনীল শুভ রায় দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  বলেন, প্রথম দুই দফার ফলাফল খারাপ হওয়ায় তৃতীয় দফা নিয়ে কোনো প্রস্তুতি ছিল না। তবে জেলা পর্যায়ে অনেকেই যে যার মতো করে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু জয়ের কোনো খবর পাননি। একইভাবে তৃতীয় দফায় সরাসরি কাউকে দলের সমর্থন না দিলেও জাপার অনেকেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন বলে জানিয়েছেন দলের নবনিযুক্ত দপ্তর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ। তিনি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে জানান, এ ব্যাপারে সঠিক সংখ্যা জানানো সম্ভব হচ্ছে না, তবে অনেকেই জাপার ব্যানারে নির্বাচন করছেন বলে জেনেছেন। যারা নির্বাচন করছেন তাদের তালিকা পাঠাতে বলেছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!