DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

হাসিনা সরকার পতনের এক দফা আদায়ের আন্দোলনে অটল ও সংকল্পবদ্ধ বিএনপি

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর কয়েক মাস। নির্বাচনের আগেই নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। সরকারের পতন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে এক দফা আন্দোলন করার পরিকল্পনা করছে দলটি। এজন্য আগে থেকে পর্যায়ক্রমে কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। একই ধরনের কর্মসূচিতে আছে সমমনা আরও অনেক দল। এসব দলকে নিয়ে চলমান যুগপৎ আন্দোলনকে এক দফার আন্দোলনে পরিণত করে দাবি আদায়ের লক্ষ্য রয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র। দলটির বিভিন্ন সূত্রের দাবি এক দফার আন্দোলন সফল করতে এখন পর্যায়ক্রমে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এক দফার আন্দোলন হবে চূড়ান্ত আন্দোলন। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। 

দলীয় সূত্র জানায়, চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণার আগেই নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্যমত গড়তে চান নীতিনির্ধারকরা। এজন্য গত বছরের ন্যায় আবারো সারা দেশে ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিতে ফিরছে বিএনপি।

তৃণমূল থেকে শক্তি সঞ্চার করে ঢাকায় বড় কর্মসূচির মাধ্যমেই এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা আসতে পারে। 

চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণার আগে একদিকে চলবে জনমত তৈরি ও যুগপৎ আন্দোলন, অন্যদিকে ১০ দফা দাবির পক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে জনমত গঠনে কাজ করবেন নীতিনির্ধারকরা। এ ছাড়া চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিকভাবে চাপ বাড়াতেও কাজ করবেন দলটির শীর্ষ নেতারা। 
বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। 
নেতারা বলছেন, দীর্ঘ ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছে দলটির  নেতাকর্মীরা। রাজপথে একের পর এক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হলেও বিরোধীদের কোনো দাবিই মেনে নেয়নি সরকার। বরঞ্চ বিএনপিসহ বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। 

গত বছরে ১০ বিভাগীয় সমাবেশের মধ্যে দিয়ে সরকার পতন ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনের গতি পায় বিএনপি। সারা দেশে নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ  নেন। বিএনপি’র আন্দোলনে অংশ নেয় সাধারণ মানুষ। ২০২২ সালের জুলাই থেকে বিএনপি’র আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে। এতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দলটির ১৭জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক। এই সময়ে আন্দোলন করে কারাগারেও গেছেন দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যসহ শ’ শ’ নেতাকর্মী। নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেও ধারাবাহিকভাবে ৯টি বিভাগীয় সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে পালনে সফল হলেও ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে বাধে বিপত্তি। গত বছরের ১০ই ডিসেম্বর ছিল ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ। এই সমাবেশের তিনদিন আগেই রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান দলটির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় দলটির শীর্ষ নেতারা  গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। এতে হঠাৎ করেই হোঁচট খায় বিএনপি’র আন্দোলন। পরবর্তীতে সরকারবিরোধী দলগুলো নিয়ে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এদিকে রমজান মাসেও যুগপৎ আন্দোলন চালিয়েছে বিএনপি। 

নেতারা বলছেন, সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিতে আন্দোলনে নামার আগেই আবারো মাঠপর্যায়ে ঝাঁকুনি দিতে চায় বিএনপি হাইকমান্ড। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, সুশীল সমাজ আর বুদ্ধিজীবীদের সক্রিয় করা হবে। সে হিসেবে এক দফার আন্দোলনে সময় নিবে বিএনপি’র নীতিনির্ধারকরা। কেউ কেউ বলছেন, ইউনিয়ন, থানা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কঠোর কর্মসূচি পালিত হবে। মাঠের আন্দোলনের ফলাফল হিসাব-নিকাষ করে ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা আসতে পারে।  
দলটির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে এক দফার আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এক দফার আন্দোলনই হবে সরকারের বিদায়ের চূড়ান্ত ধাপ। এজন্য কিছুটা সময় নিচ্ছে বিএনপি। সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার আগে দলের সক্ষমতা বাড়াতে চাচ্ছেন তারা। এজন্য রাজধানীর পাশাপাশি বিএনপি’র চোখ এখন তৃণমূলে। 

আগামী পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসকে টার্গেট করে ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউন করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। 
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। আমাদের দাবি, শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেয়া হবে না। দেশের জনগণের চাওয়া নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। এজন্য আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। শিগগিরই আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাবো।

 

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!