ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ সংবিধান ছাড়া অন্য সব সংস্কার নির্বাহী আদেশে এক মাসে বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের বিস্তারিত মতামতের ভিত্তিতে আমাদের বিস্তারিত মতামত দিয়েছি। সংস্কার বিষয়ে আমরা তিন দিন সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সংস্কার কমিশন অন্যান্য দলের সঙ্গেও বৈঠক করেছে। আমরা আমাদের মতামত লিখিতভাবেও দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আলোচনার মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে কাছাকাছি আসতে পেরেছি। আমরা সেটাই গ্রহণ করব, যেটা জাতির জন্য বৃহত্তর স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। এটা জাতীয় নীতিতে গৃহীত হলে এ জাতির মধ্যে একটা ঐক্য তৈরি হবে। আমরা সেটাই গ্রহণ করব, যে প্রস্তাবগুলো সংবিধান ও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে। রাষ্ট্রের সবকিছুর মধ্যে একটা ভারসাম্য সৃষ্টি হবে। এর মধ্য দিয়ে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর যে আকাঙ্ক্ষা, তা বাস্তবায়ন করতে পারব।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মনে করি, ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব। এর আগে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচনমুখী যে সংস্কারগুলো আছে, সেগুলো চিহ্নিত করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা যেন আমরা বাস্তবায়ন করি। এমন কোনো সংস্কার নেই, যা এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, শুধু সংবিধান ছাড়া অন্য যে সংস্কারগুলো আছে, তা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এক মাসের ভেতরে বাস্তবায়ন সম্ভব। সেটা আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। সুতরাং, নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার একটি কারণও নেই।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বৈঠকে অধিকাংশ দলই ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা সেটি বিবেচনা করবেন। আমরা আশা করি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন। কারও প্রতি রাগ-বিরাগ, অভিমান প্রদর্শন করবেন না। জাতি তাঁর কাছে নিরপেক্ষতা আশা করে।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনীর যেসব প্রস্তাব বিভিন্ন দল দিয়েছে, আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তারা যেভাবে আন্তরিকতা দেখিয়েছে, তাতে আগামী এক মাসের মধ্যে একটা ঐকমত্যে আসা সম্ভব বলে মনে করি। কিছু কিছু বিষয়ে অবশ্যই দ্বিমত থাকবে, সব বিষয়ে সবাই একমত হবে—এমনটা আমরা আশাও করি না। যেসব বিষয়ে আমার একমত হতে পারব, সেটা অবশ্যই পরবর্তী সংসদে সংশোধনী হবে। এসব বিষয়ে এখন ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সনদ স্বাক্ষরিত হলেই হবে। এটা আমাদের ইলেকশন মেনিফেস্টোতেও আসবে। এটা অঙ্গীকার হিসেবে থাকবে।’
এ সময় সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, উনারা যথেষ্ট আন্তরিক, তবে ইতিমধ্যে অনেক সময়ক্ষেপণ হয়েছে। আশা করি, আর বেশি সময় নেবেন না। এই মাসের মধ্যে একটা কম্পাইল করা সম্ভব হবে।’

