DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

পালিয়ে আসা ১৩৪ মিয়ানমার সেনা ফেরত গেল, বদলে ৪৫ বাংলাদেশি ফিরল

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সীমান্তবর্তী রাখাইনে আরাকান আর্মির সাথে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসা ১৩৪ মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পরিবারের সদস্যদের জান্তা সরকারের একটি সামরিক জাহাজে আজ রোববার কক্সবাজার থেকে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, তিন দফায় তারা এখন পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৭৫২ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে। তবে তাদের সাথে থাকা গোলাবারুদ অস্ত্রগুলো বাংলাদেশের কাছে গচ্ছিত রয়েছে। একই জাহাজে করে বিভিন্ন সময় পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীদের হাতে গ্রেপ্তারর ৪৫ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে জান্তা সরকার। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে তাদের ফেরত দেয় দেশটি।

রোববার (৯ জুন) সকাল আটটার দিকে মায়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ 'ইউএমএস চিন ডুইনে' করে তাদের বাংলাদেশের জলসীমায় নিয়ে আসে মিয়ানমার নৌবাহিনী। সেখানে বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস টাকবোটে করে বেলা ১০টার দিকে তাদের আনা হয় কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মাহফুজুল ইসলাম জানান, মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা ৪৫ জনকে তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর পরবর্তীতে মিয়ানমারের জাহাজে করে বাংলাদেশে থাকা মিয়ানমারের সৈনিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ফেরত গেছে।

একই টাকবোটে করে দুপুর ১২টার দিকে মাঝ সাগরে অপেক্ষমাণ জাহাজে নিয়ে যাওয়া হয় চলমান সংঘাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১৫২ নাগরিককে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ সেদেশের বিজিপি ও সেনাবাহিনীর সদস্য বলে জানা গেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারের উইংয়ের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাঈনুল কবির বিষয়টি তদারকি করেছেন।

মিয়ানমারের নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মনোয়ার হোসেন তার টুইটারে লিখেন, ৪৫ জন বাংলাদেশি মিয়ানমারের কারাগারে ছিল। এই নিয়ে গত এক বছরে ২৪৭ জনকে বাংলাদেশের ফেরত পাঠানো হলো।এদের অধিকাংশই মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি পাওয়ার লোভে মানব পাচারের শিকার।

শনিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতওয়ে থেকে জাহাজটি যাত্রা শুরু করে। কারাভোগ শেষে ৪৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে আসা জাহাজেই মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতে জের ধরে পালিয়ে আসা ১৩৪ জন বিজিপি, সেনা সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক ফেরত যাবেন।

এ বিনিময়ের সাথে সংযুক্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় আর ১৫২ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনা ও তাদের সাথে তাদের পরিবারের সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদেরকেই যৌথ সিদ্ধান্তে ফেরত পাঠানো হয়।

তার আগে ২৫ এপ্রিল মিয়ানমার থেকে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে ছিলেন ১৭৩ জন বাংলাদেশি। একই সঙ্গে ওইদিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ২৮৮ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।

১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৩৩০ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।

তবে থাইল্যান্ড ভিত্তিক সংগঠন ফর্টিফাই রাইটসের অভিযোগ যে, বাংলাদেশে মিয়ানমার জান্তা সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে ঢুকতে দেওয়া হলেও সেখানে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

তবে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ কেবলমাত্র মানবিক কারণে গুরুতর আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ঢুকতে দিয়েছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!