DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩০৯১

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ হামাস পরিচালিত গাজার মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে প্রায় ছয় মাস ধরে চলা যুদ্ধে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে ৩৩ হাজার ৯১ জন নিহত হয়েছে। খবর এএফপি’র।
দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নতুন করে ৫৪ জন প্রাণ হারানোয় এই সংখ্যা বেড়ে মোট ৩৩ হাজার ৯১ জনে দাঁড়ালো।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় ইসরায়েলের এসব হামলায় মোট ৭৫ হাজার ৭৫০ জন আহত হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে। শুক্রবার পাস হওয়া প্রস্তাবে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি তুলেছিল পাকিস্তান। পরিষদের ৪৭ সদস্যদেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ ৬টি দেশ। তবে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত, ফ্রান্সসহ ১৩টি দেশ।

প্রস্তাব পাসের মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে এবারই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান নিল মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পর্ষদ।

এছাড়াও প্রস্তাবে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি, স্থানান্তর ও অন্য কোনোভাবে না পাঠাতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাজায় নতুন করে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে এই আহ্বান জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে গাজায় গণহত্যার ঝুঁকি নিয়ে গত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রুলের কথাও উল্লেখ রয়েছে প্রস্তাবে।

প্রস্তাবে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এর তীব্র জানায় মানবাধিকার পরিষদ।

পাশাপাশি দক্ষিণ গাজার রাফায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে প্রস্তাবে। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মুখে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার অর্ধেকের বেশি রাফায় আশ্রয় নিয়েছেন।

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের দপ্তরে প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে উপস্থিত ছিলেন সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম মোহাম্মদ খারাইশি। প্রস্তাবটি নিয়ে ভোটের আগে তিনি বলেন, ‘এই গণহত্যা বন্ধে আপনাদের সবার জেগে ওঠা প্রয়োজন। এটা এমন এক গণহত্যা, যেটা টেলিভিশনের পর্দায় পুরো পৃথিবী দেখছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রস্তাব পাস হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাস্তবে এর কার্যকারিতা সেভাবে নেই।

এদিকে গাজায় ত্রাণকর্মী ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সাত ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

ইসরায়েলকে বরাবরই সমর্থন দিয়ে এসেছে বাইডেন প্রশাসন। তবে এই প্রথম সহায়তা ও অস্ত্র বন্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন বাইডেন। এতে ছয় মাস ধরে চলা যুদ্ধে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে বেশির ভাগ সময় ইসরায়েলের কূটনৈতিক ঢাল হিসেবে ভূমিকা রাখে ওয়াশিংটন। তবে ইসরায়েল ও গাজায় যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ নীতিগত কোনো পরিবর্তন আনবে কি না, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি। তিনি বলেন, শিগগিরই ইসরায়েল তাদের গৃহীত পদক্ষেপের ঘোষণা দেবে বলে ওয়াশিংটন আশা করছে।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!