DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ রিজার্ভে

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ডলার সংকটের মধ্যে চাপ বাড়াচ্ছে বিদেশি ঋণ ও সুদ পরিশোধ। এক বছরের ব্যবধানে শুধু সুদ পরিশোধই বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। শুধু জানুয়ারি মাসেই বৈদেশিক ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি পরিশোধে খরচ হয়েছে। ফলে, প্রভাব পড়ছে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে। ঋণ পরিশোধ বৃদ্ধির এই ধারা আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। পর্যাপ্ত ঋণের অভাবে উন্নয়ন  কর্মকাণ্ডে বাধা তৈরি করবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদেশি ঋণের অর্থছাড় যেমন কমেছে, উল্টোদিকে বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ ও সুদের চাপ অনেক বেড়েছে। ইআরডি’র হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে দেশে বিদেশি ঋণের অর্থছাড় হয়েছে ৪৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে পরিশোধ করতে হয়েছে ১৮৫ কোটি ৬৭ প্রায় ডলার। আর গত জানুয়ারি মাসে বৈদেশিক ঋণ ছাড় হয়েছে ৩৩ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, আর পরিশোধ করতে হয়েছে ২৮ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
ঋণ ও সুদ পরিশোধের তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশকে সুদসহ আসল পরিশোধ করতে হয়েছে ১৮৫ কোটি ডলার।

বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২০ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। অথচ গত বছরের একই সময়ে পরিশোধ করতে হয়েছিল ১২৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। পরিশোধ করা মোট ঋণের মধ্যে সুদই রয়েছে ৭৬ কোটি ডলার, দেশি মুদ্রায় তা ৮ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে তা ছিল, ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, দেশি মুদ্রায় তা ৩ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে শুধু সুদ পরিশোধের চাপই বেড়েছে প্রায় আড়াইগুণ।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক ঋণ ও সুদ পরিশোধের জন্য যে টাকা বরাদ্দ দেয়া ছিল, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে সরকারের এখন ৪ হাজার ২০ কোটি টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক ঋণ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা, শতাংশের হিসাবে ৬.৪৬। বৈদেশিক ঋণের উপর সুদ খাতে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ছে ২ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা বা ১৯.৫৮ শতাংশ।

এদিকে বিদেশি ঋণের অর্থছাড় কমলেও ঋণের প্রতিশ্রুতিও অনেক বেড়েছে। জানুয়ারি শেষে বিদেশি ঋণদাতা সংস্থাগুলো ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৭১৭ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতি ছিল ১৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের প্রথম দিকে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ব্যয় কম হয়। বেশ কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের ১০ শতাংশের কম অর্থ ব্যয় করেছে। বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। তবে অর্থবছরের শেষদিকে অর্থ ব্যয় বাড়বে।

ওদিকে বিদেশি ঋণ ও সুদ পরিশোধ অনেক বাড়ায় দেশের অর্থনীতি চাপে আছে বলে জানিয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেছেন, বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ তো কিছুটা আছে। খুব যে বেশি চাপ আছে বিষয়টা ওই রকম না। ঋণ পরিশোধের জন্য আমরা কি মরে গেছি?

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!