DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বিএনপিকে নিয়ে মোটেও বিচলিত নয় সরকারঃ কাদের

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কী বলবে ও করবে এটা নিয়ে আমরা বিচলিত না। আমরা বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ে চিন্তিত। গতকাল আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র বন্ধু তো দেশে আছে, বিদেশেও আছে। এখন নির্বাচনে অংশ নেয়নি, আন্দোলনে ব্যর্থ। তাদের তো বিদেশি বন্ধুদের কাছে মুখ রক্ষার বিষয় আছে। তিনি বলেন, অস্থিরতার মধ্যেও কিন্তু আমাদের জনগণের কোথাও হাহাকার নেই। জনগণের পক্ষ থেকে কোনো বিক্ষুব্ধ আমরা লক্ষ্য করিনি। সবাই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে। আমাদের দায়িত্ব যেটা আমরা সেটা পালন করছি।

আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন এই বিষয়টি নিয়ে ভাবেন। দেশের মানুষকে যে অঙ্গীকার তিনি করেছেন বিশেষ করে নির্বাচনী ইশতেহারে যে বক্তব্য জনগণের কথা ছিল, সেটা বাস্তবায়নে মাথা ঘামাচ্ছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে ডেকে পরামর্শ দিচ্ছেন, কর্ম-পরিকল্পনা দিচ্ছেন। কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। কথা বেশি না বলে কাজ করার জন্য দায়িত্বশীল সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিএনপি’র আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে অংশ নেয়নি বিএনপি। এখন এটা একটা দল তার প্রাসঙ্গিকতা নিজেরাই হারিয়ে ফেলেছেন।
 এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আমেরিকার সম্পর্ক আরও ভালো হবে কি না? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরও ভালো হবে না কেন? সারা দুনিয়ার সবাই কিন্তু নিজেদেরকে নিয়ে ব্যস্ত আছে। আমেরিকাও চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইসরাইলকে তারা সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে। একদিকে বৃষ্টি, ঠাণ্ডা, শৈত্যপ্রবাহ অপরদিকে রক্ত। বৃষ্টির পানির সঙ্গে লাল রক্ত পানি আর দেখা যায় না। আমেরিকার দুষ্টু ছেলে ইসরাইল, ইসরাইল তাদের কথা শুনছে না। বাইডেন বলছে একটা, নেতানিয়াহু বলছে আরেকটা। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করার অঙ্গীকার করেছে হামাসকে ধ্বংস করা পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, ওইদিকে হুতিদের সঙ্গে সংঘাত এসেছে। ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজ ও ভ্যাসেলগুলোর চলাচল অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছে সুয়েজ ক্যানেল দিয়ে। সুয়েজ ক্যানেল দিয়ে যাত্রাটা বন্ধ করে আমেরিকার জন্য আরেকটা সংকট সৃষ্টি করেছে। আজকের মধ্যপ্রাচ্যের দেশে দেশে কৃষকরা রাস্তায়, দ্রব্যমূল্যের জন্য এবং তাদের যন্ত্রপাতির মূল্যবৃদ্ধির জন্য। এসব নিয়ে ইউরোপের প্রায় সব দেশে কৃষকরা রাস্তায় নেমেছেন। জার্মানিতে নেমেছেন, ফ্রান্সে নেমেছেন। আমেরিকার তো এখানে অনেক চিন্তা আছে।

 তারা নিজেদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেরা ব্যস্ত। বাংলাদেশের দিকে অত মনোযোগ দেয়ার সময় তাদের কোথায়। বাংলাদেশের জনগণের ভারত বিরোধী মনোভাবের কারণে সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কি না? প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে কোনো ধরনের টানাপোড়েন নেই। নির্বাচন বানচালে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলছেন কি না- জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কথা যখন হয়, কথা প্রসঙ্গে অনেক কথায় হয়। স্পেসিফিক কোনো বিষয় নিয়ে আমরা চাপের মধ্যে নেই। কোনো ব্যাপারে আমরা কোনো চাপের মুখে নেই। আমরা চাপ অনুভব করছি না। অহেতুক একটা বিষয় নিয়ে মাতামাতি করবো দরকারটা কি। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমিতো এ কথা বলিনি- আগামীকালই দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। আমি বলেছি- নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। এর অর্থ কি আগামীকাল কমে যাবে? এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা আমার মুখ দিয়ে অন্তত বের হবে না। আমেরিকার প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্র করছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, এখন কথায় কথায় শুধু ষড়যন্ত্র বললে কি দায়িত্ব শেষ হবে। ষড়যন্ত্র বিষয়টা আছে, থাকবে। ষড়যন্ত্রের ঘাড়ে সবকিছু চাপিয়ে দিয়ে নিষ্কর্ম থাকার কোনো কারণ নেই। রাজনীতি যেখানে আছে, ষড়যন্ত্র সেখানে থাকবে। বিশ্ব রাজনীতি হোক, দেশের রাজনীতি হোক। এখন এর মধ্য দিয়েই আমাদের চলতে হবে।

 

আমার কথা হচ্ছে, আমরা তো ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করছি না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দলীয় প্রতীক না থাকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো বড় কাজ করতে হলে কিছু ছোট ছোট বিষয় আছে এগুলো এর মধ্যে এসে পড়বে। কারও ইচ্ছায় নির্বাচন প্রভাবিত হবে এর কোনো কারণ নেই। নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী এবার তারা প্রমাণ করেছে এবং তারা আরও শক্তিশালী হবে। তারা আরও বেশি করে তাদের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালন করতে পারবে। তাতে করে নির্বাচনী ব্যবস্থায় সামনের দিকে আমাদের জন্য শুভদিন অপেক্ষা করছে। দলীয় প্রতীক না দিলেও প্রার্থীদের সমর্থন থাকবে কি না? প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কোনো প্রকার সমর্থন দেবো না।

জনগণ যাকে পছন্দ তাকে নির্বাচিত করবে, যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। গত সোমবার ক্যাবিনেট মিটিংয়ে দ্রুত বিচার আইন স্থায়ী করার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা আইন ক্যাবিনেটে প্রথমত, নীতিগত সিদ্ধান্ত করে, তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। দুইটা মিটিং লাগে। এরপর বিষয়টা যাবে পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলাপ-আলোচনা বা রিকমেন্ডেশন থাকলে সেটাসহ পার্লামেন্টে বিল আকারে যাবে। পার্লামেন্টে বিল আকারে আইনটা পাস হবে। পার্লামেন্টে আইনটি সংশোধনীর ব্যাপারে আলোচনা করারও অনেক সুযোগ আছে। তো সেক্ষেত্রে কোনো অবস্থায় স্থিতি দেবে সেটা এখন এই মুহূর্তে বলা যায় না। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!