DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

‘ছবি তোলার কী আছে, আমি বাঘ না ভাল্লুক?’ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ডিআইজি

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ‘আমার ছবি তোলার কী আছে, আমি বাঘ নাকি ভাল্লুক? প্রত্যেকের যেমন সম্মান আছে তেমনি আমারো সম্মান আছে। কে বা কারা আমার বিরুদ্ধে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে অভিযোগ দিলো আর সেটি নিয়ে কোনো যাচাই-বাছাই না করেই সংবাদ প্রচার করা হলো- এটা ঠিক না’। 

বৃহস্পতিবার বিকালে বগুড়া-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হাজির হন বরিশাল মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম। এ সময় আদালতে প্রবেশের আগে সাংবাদিকরা ছবি তুলতে ক্যামেরা বের করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।

এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে বিভিন্ন সময় নির্বাচনী সমাবেশের মঞ্চে ভোট চাইতে দেখা গেছে এবং যাচাই-বাছাই কমিটি সেটির সত্যতা পেয়েছে। এ ছাড়া আপনাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে তিনি বলেন- আদালতে আমি জবাব দিয়েছি এবং বরখাস্তের বিষয়টি আমার জানা নেই।

এর আগে বুধবার বগুড়া-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং বগুড়া যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ শাহনাজ পারভীন একটি নোটিশ দেন। নোটিশে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার মধ্যে অনুসন্ধান কমিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ‘২রা জানুয়ারি দৈনিক বগুড়া অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়- আপনি হামিদুল হক মিলন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত আছেন। আপনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজাদী আলম লিপির স্বামী।


চাকরি থেকে এক মাসের ছুটি নিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এলাকায় এসে স্ত্রী শাহাজাদী আলম লিপির পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।’ ‘এ ছাড়া আপনার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরো নির্বাচনী এলাকা বিপর্যস্ত করে রেখেছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। যা আপনার পেশাগত অসদাচরণের পাশাপাশি সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ ‘এ অবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন বরাবর সুপারিশ করা হবে না- তা ৪ঠা জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৩টায় আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত জবাবের নির্দেশ দেয়া হলো।’
এদিকে বগুড়া-১ আসনের তবলা প্রতীকের প্রার্থী শাহাজাদী আলম লিপির প্রচারণায় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করার ঘটনায় বরিশাল মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলমকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত করার বিষয়ে অনাপত্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে এ বিষয়ে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি জানায়, সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার অভিযোগে বরিশাল মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলমকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। হামিদুল আলমের স্ত্রী শাহাজাদী আলম ওরফে লিপি বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি- সোনাতলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন

বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ‘আমি হৃদরোগ-ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছি। এ কারণে ১২ই ডিসেম্বর থেকে ২৮ দিনের মেডিকেল ছুটিতে বগুড়া শহরের বাসায় বিশ্রামে আছি।’ তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রচারণা শুরুর পর তিনি নির্বাচনী এলাকায় যাননি। নির্বাচনী কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তার স্ত্রীর বিজয় ঠেকাতে একটি পক্ষ ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত প্রায় ৭ মাস আগে থেকেই হামিদুল আলম মিলন তার স্ত্রী শাহাজাদী আলম লিপির নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াতে শুরু করেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টির বেশি সভায় অংশগ্রহণ করেন তিনি এবং সভাগুলেতে তিনি নানা ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথা বলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এ ছাড়া প্রশাসনের নানা ধরনের ক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন তিনি। এসব নানা ঘটনায় বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে হামিদুল আলম মিলন ও তার স্ত্রী শাহাজাদী আলম লিপিকে। এই প্রার্থী নৌকা প্রতীক চেয়েছিল কিন্তু তা না পেলেও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। অবশেষে তবলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে ভোটের মাঠে বেশ এগিয়েও আছেন তিনি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!