DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন আইন পরিপূর্ন হয়নিঃ ব্রিঃ জেনারেল সাখাওয়াৎ হোসেন

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অবঃ) এম. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেছেন, জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে যে নতুন আইনটি পাস হয়েছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ হয়েছে বলে আমি মনে করি না। আমি বলব সার্চ কমিটি বা অনুসন্ধান কমিটি গঠনের একটি আইন হয়েছে। এ আইন সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এর মধ্যে আরও বেশ কিছু জরুরী বিষয় যুক্ত করা যেত। এর মধ্যে জাতীয় সংসদকে সম্পৃক্ত করার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, এখন যে আইন হয়েছে, তাতে সার্চ কমিটি একটি নামের তালিকা করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। কিন্তু সংবিধানেই আছে প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ছাড়া বাকি সবকিছুতে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেবেন রাষ্ট্রপতি। ফলে সার্চ কমিটির তৈরি করা নামের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেই। তিনি এতে চুড়ান্ত মতামত দেবেন।

সংসদকে সম্পৃক্ত করলে কিছুটা হলেও রাজনৈতিক ঐকমত্য আসার সুযোগ ছিল। অর্থাৎ সার্চ কমিটির দেওয়া নামগুলো সংসদের কোনো একটা কমিটিতে যাবে। বর্তমানে সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটি আছে। সেখানে স্পিকারের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং সব দলের প্রতিনিধি আছে। চাইলে আরও একটি নতুন সংসদীয় কমিটি গঠন করা যেত। সেখানে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা এবং অন্যান্য দলের সমানসংখ্যক সাংসদ থাকতে পারতেন।

তিনি বলেন, এভাবে সংসদকে যুক্ত করতে পারলে দুটো লাভ হতো। প্রথমত, এ প্রক্রিয়ায় কিছুটা হলেও রাজনৈতিক ঐকমত্য সৃষ্টি হতো। কারণ, প্রধানমন্ত্রী যে মতামতটা এখন আলাদাভাবে দেবেন, সেটি তিনি সংসদীয় কমিটিতেই দিতে পারতেন। বিরোধী দলগুলোও তাদের মতামত দিতে পারত। সেখানেই একটা বিতর্ক বা যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যে আসা যেত। এ ছাড়া সংসদীয় কমিটিতে বিতর্ক হওয়া কিংবা আলোচনা হলে সেটা গণমাধ্যম হয়ে মানুষের কাছেও চলে আসত। ফলে বিষয়টা আরও গোপনীয় থাকত না।

উপমহাদেশের যেসব দেশ আইন করেছে, তারা ইসি গঠনে রাজনৈতিক ঐকমত্য বা সংসদকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছে। কিছু দেশে রাজনৈতিক নেতারা মিলে নামের তালিকা করছেন। সেখানে সরকারি দল ও বিরোধী দল একসঙ্গে কাজ করছে।

এখন আইনটা হয়ে গেছে। সরকার নাগরিক সমাজ বা সংসদের বিরোধী দলগুলোর সব প্রস্তাব নেয়নি। আশা করি, ভবিষ্যতে তারা আইনটি পরিপূর্ণ করবে। আইনটি সমৃদ্ধ করার প্রয়াস নেবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছে। এটা ভালো দিক। তারা ভবিষ্যতেও সংসদকে যুক্ত করার বিষয়ে সরকারকে রাজি করাতে চেষ্টা চালাবে বলে মনে করি।

নির্বাচন কমিশনে কারা আসবেন—এ বিষয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। আমি মনে করি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বা কমিশনার হিসেবে যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হবে, তাঁদের প্রশাসনিক দক্ষতা থাকতে হবে। তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করার মনোবৃত্তি রাখেন। সিদ্ধান্ত নিতে পারেন স্বাধীনভাবে। আইন প্রয়োগের সক্ষমতা এবং সৎসাহস আছে—এমন লোককেই নির্বাচন কমিশনে বেছে নিতে হবে।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!