DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

মুক্তির পর নিজ বাসভবন ফিরোজাতেই উঠবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে   মুক্তি পাওয়ার পর গুলশানে নিজের বাসভবন ‘ফিরোজাতেই উঠবেন বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকাল চারটার দিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারের ইতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

 

তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছেন তিনি। আর এই সময়ে অবশ্যই খালেদা জিয়া তার নিজ বাসভবনে অবস্থান করবেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাই শামীম ইস্কান্দর  জানান, তার বোন মুক্তি পাওয়ার পর নিজের বর্তমান বাসভবন ফিরোজাতেই উঠবেন।

শামীম ইস্কান্দর  জানান, তিনি এখনও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার বোনের মুক্তির বিষয়টি শোনেননি। তবে  তিনি বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্তি পাওয়ার পর এখন যে বাসভবন ফিরোজা সেখানেই উঠবেন। আর বিষয়টি এখনও তাকে জানানো হয়নি।’

এদিকে, খালেদা জিয়ার মুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে দলের সিদ্ধান্ত কী হবে, তা এখনও বলতে পারেননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র বিষয়টি জেনেছি। এখনও এ বিষয়ে আলোচনা করিনি। তবে আমরা তো ম্যাডামকে বিদেশে নিতে চেয়েছিলাম। এই অবস্থায় কী করা যায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের কথা তুলে ধরবেন। একইসঙ্গে সরকারের এই সিদ্ধান্তে পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলবেন। তবে, তা প্রচার হবে অনলাইনে। বিএনপির দলীয় অফিসিয়াল ফেসবুকে তা প্রচার হবে বলে জানান তিনি।

গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’

গত ৮ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিলেন, ‘খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাবর আবেদন করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে তারা মন্ত্রীর কাছ থেকে সেই চিঠি পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান।’ পরে দলীয় সূত্রে জানা যায়, ওই চিঠি শামীম ইস্কান্দর দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে পাঠানো হয় খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের ১ এপ্রিল তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠিত বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড কারাগারে গিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। এরপর ৭ এপ্রিল বেলা ১১টা ২০ মিনিটে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের করে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়। ওইদিন কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর কক্ষে অবস্থান করেন খালেদা জিয়া। সেদিনই তাকে ফিরিয়ে নেওয়া কারাগারে। এরপর ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করতে ও চিকিৎসাসেবা শুরু করতে পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুই দিন পর ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর বিকাল পৌনে চারটার দিকে তাকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়। চূড়ান্তভাবে ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেদিন থেকে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।

মঙ্গলবার বিকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে তার বাসায় রেখেই চিকিৎসা করাতে হবে। বিদেশ গমণ না করার শর্তে এ সুপারিশ করা হয়েছে। তিনি এও বলেন,  ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন মনে করবে তখন থেকেই তার মুক্তি হবে।’

জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, ‘আসলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কোথায় থাকবেন তা এখনও ঠিক করা হয়নি। আলোচনা করে তা ঠিক করা হবে।’ 

এদিকে, মঙ্গলবার বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল গুলশানে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ব্রিফ করবেন বলে জানা গেছে। দলের একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা এখন গুলশানমুখী। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে পর্যালোচনার পর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি সময় নির্দিষ্ট করার চেষ্টা করবেন। এরপরই খালেদা জিয়াকে প্রিজন সেল থেকে গুলশানে নেওয়া হবে।

ছাত্রদলের দুই নেতা জানান, ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রাজধানীর শাহবাগে বিএসএমএমইউতে ভিড় জমিয়েছেন নেতাকর্মীদের কেউ-কেউ। তবে, দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের জড়ো না হওয়ার নির্দেশনা আসতে পারে সংবাদ সম্মেলন থেকে, এমন ইঙ্গিত মিলেছে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!