DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

হঠাৎ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের তোড়জোর কার স্বার্থে?????

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও গোয়েন্দা তথ্য সমন্বয়ের জন্য গঠন করা হচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল।

নবগঠিত প্রতিষ্ঠানটির অফিস হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। মন্ত্রিপরিষদের সিনিয়র সদস্য, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা, পুলিশ-র‌্যাবের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পরিচালিত হবে এটি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াকে অবসরপরবর্তী সময়ে বিশেষ দায়িত্ব হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সচিব করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

গত ১৩ আগস্ট অবসরে যাওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল ডিএমপির ২৭তম কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার; কিন্তু আগস্ট মাসে নিরাপত্তা পরিস্থিতিসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করে তাকে এক মাসের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উন্নত দেশের আদলে গঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যুক্ত থাকবেন।

তবে নিরপেক্ষ নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে এই নিরাপত্তা কাউন্সিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং 'র' এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে গঠন করা হচ্ছে।ভারতের সাথে বাংলাদেশের অবৈধ হাসিনা সরকারের অতি মধুর সম্পর্কের কারনে বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয়টি এখন শুধু মাত্র আভ্যন্তরীন বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এই নিরাপত্তাও এখন অনেকাংশে হাসিনা সরকার বিরোধীদের দমনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।জঙ্গী দমনের সাথে সাথে সরকার বিরোধীদের এখন থেকে জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকী স্বরুপ বিবেচনা করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি চলছে।

নানা চ্যালেঞ্জ পার করে সবচেয়ে বেশি সময় ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় আছাদুজ্জামান মিয়ার ওপর আস্থা রাখতে চাইছে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল।

তারই ধারাবাহিকতায় তাকে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে সরকার। নিরাপত্তাবিষয়ক যে কোনো সিদ্ধান্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে নেওয়াসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে কাজ করবে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, বহির্বিশ্বের সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলাসহ জঙ্গিবাদের মতো বিষয় নিয়েও কাজ করবে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল।

আইনশৃঙ্খলা রাক্ষাকারী বিহিনীর এ্ক শীর্ষ কর্মকর্তা  বলেন, সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বিশয়ক একটি সভায় অনির্ধারিত এক আলোচনায় উঠে আসে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি। তখন এর দায়িত্বে কারা আসতে পারেন, তা নিয়েও আলোচনা হয় সেখানে। আলোচনায় আছাদুজ্জামান মিয়ার নাম উঠে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রকৃয়াটি প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। ইতিমেধ্যে এখাধিক কমিটি এ বিশয়টি নিয়ে কাজ করছে। দেশের সারবিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশিলতা রক্ষায় কাজ করার জন্য একটি সচিবালয় গঠন প্রয়োজন। এ লক্ষে কাজ করা হচ্ছে।  জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে জানতে  ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক তৌহিদুল হক  বলেন, ‘এটিকে দুভাবে দেখতে হবে। প্রথমত বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের সম্পর্ক। আরেকটি হলো- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থান। এ দুটি বিষয় যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে বাংলাদেশকে প্রতি মুহূর্তে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

সে বিষয়টি সরকারও অনেক সময় সরাসরি স্বীকার করছে। রাষ্ট্রকে যদি নিরাপত্তা হুমকির মধ্য দিয়ে চলতে হয় তা হলে প্রথম কাজ হলো- নিরাপত্তার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা এবং তা কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তার জন্য সে মানের পেশাদার প্রতিষ্ঠান তৈরি করা। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশে নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের চিন্তা খুবই সাধুবাদযোগ্য। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। বুঝতেই পারছি এখানে অনেক সিনিয়র সিটিজেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থাকবেন। বাংলাদেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রগুলোকে তারা মজবুত করবেন বলেই প্রত্যাশা করি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!