DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের ইন্তেকাল।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস আর নেই। গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের তিনি ইন্তেকাল করেন ,ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন ।মৃত্যুকালে  তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের মেজো ছেলে মাহমুদ হাসান বিশ্বাস। ১৯৯১ সালে আবদুর রহমান বিশ্বাস রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হয়।

সাবেক রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেন।

আশংকাজনক অবস্থায় বনানীস্থ গ্রান্ড প্রেসিডেন্ট প্যালেস বাসভবন থেকে সন্ধ্যার পর সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে গুলশানস্থ ইউনাইটেড হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, আবদুর রহমান বিশ্বাস বাংলাদেশের ১১ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ১৯২৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের শায়েস্তাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আবদুর রহমান বিশ্বাস স্কুল ও কলেজ জীবন বরিশালে কাটে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (সম্মান) ও ইতিহাস এবং আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

প্রথমে তিনি স্থানীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষাবিস্তারেরে উদ্দেশ্যে তিনি কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এই কাজের জন্য সরকার ১৯৫৮ সালে তাকে সেচ্ছাসেবি সমাজ কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। ষাটের দশকে কিছু দিন বাবুগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে বরিশালে আইন পেশায় জড়িয়ে পড়েন।

১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে আবদুর রহমান বিশ্বাস পূর্ব পাকিস্তান আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত তিনি সংসদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি জাতিসংঘের ২২তম সাধারণ সভায় অংশ করেন। ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে তিনি বরিশাল বার আসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে তিনি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে আবদুর রহমান বিশ্বাস সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮০ সময়ে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভায় পাট মন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৮১-৮২ সালে প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস্ সাত্তারের মন্ত্রী সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা চালু হবার পর ১৯৯১ এর ৮ অক্টোবর দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন আবদুর রহমান বিশ্বাস। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি দেশের এক সামরিক ক্যু প্রতিহত করেন। ১৯৯৬ সালের ৮ই অক্টোবর তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়। প্রেসিডেন্ট থাকাকালেই ১৯৯৬ সালের এক সেনা ক্যু ঠেকিয়ে দেশবাসীর কাছে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়ান।

রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়ার আব্দুর রহমান বিশ্বাস রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার আগেই তার নির্বাচনী আসনে বড় ছেলে এহতেশামুল হক নাসিম ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালের ১২ মার্চ ঢাকায় এক বিয়ের দাওয়াতে খাবারের বিষক্রিয়ায় মারা যান নাসিম। এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন আব্দুর রহমান বিশ্বাস।

মৃত্যুর আগে ঢাকার গুলশান-এর বাসায় কোরআন শরিফ তিলাওয়াত, আল্লাহর জিকির ও মর্নিং ওয়াক করে দিন কেটেছে আবদুর রহমান বিশ্বাসের। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!