DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

অবশেষে দুই ধর্ষক সাফাত ও সাদমান সিলেটে গ্রেফতার।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  অবশেষে দেশব্যাপি প্রবল জনরোষে পুলিশ দুই হাইপ্রোফাইল ধর্ষককে গ্রেফতার করতে বাধ্য হলো।

রাজধানীর বনানীতে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার সহযোগী সাদমান সাকিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়। 

তিনি বলেন, ‘সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে আনার পর প্রাথমিকভাবে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেখানে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এ জন্য আজ তাঁদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এ কর্মকর্তা এসব কথা জানান।

কৃষ্ণপদ রায় জানান, মামলাটির তদন্তকাজের সুবিধার্থে একটি সহায়ক তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। কমিটির প্রধান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়। অন্যরা হচ্ছেন ডিবি উত্তরের উপকমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম, গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ ও উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন সেন্টারের ডিসি ফরিদা ইয়াসমিন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিলেটের মদিনা মার্কেট এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাঁদের ঢাকায় আনা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তারে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ ডিবি ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের বিশেষ দল অভিযান পরিচালনা করে।

জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন এক ছাত্রী। মামলার আসামিরা হলেন আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ একাধিকবার এবং বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ ধর্ষণ করেন। আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তাঁর মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সাফাতের জন্মদিনে দুই ছাত্রী যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তাঁর বান্ধবী জানতেন না, সেখানে পার্টি হবে। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে। সেখানে যাওয়ার পর তাঁরা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও বান্ধবী দেখেন, সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তাঁরা চলে যেতে চান। আসামিরা তখন তাঁদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাঁকে খুব মারধর করেন। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন।

বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন। এরপর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় দেহরক্ষী পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তাঁরা এতে ভয় পেয়ে যান। লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিক অসুস্থতা তাঁরা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন। এতে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই আসামীকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!