ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ বলেছেন,'দেশের বিরুদ্ধে যেকোন ষঢ়যন্ত্র ঠেকাতে ছাত্রদলকেই অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে '।
তিনি আরও বলেন, 'অবৈধ ভাবে ক্ষমতাসীনরা নতুন নতুন আইন করে এই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চায়'।
আজ রোববার সন্ধ্যায় রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাওতাল সম্প্রদায়ের বাড়িঘর এবং বিএনপির আন্দোলন চলাকালে পুলিশ অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে যে গুম, খুন ও জঙ্গিবাদ হচ্ছে এসব সরকারের কাজ। দেশের মানুষ সব কিছুই বোঝে, এসব সরকারের সাজানো নাটক।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির বিগত আন্দোলনে পুলিশ, ছাত্রলীগ যুবলীগ মিলে গাড়িতে আগুন দিয়েছে। আর বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন এবং গোয়েন্দা বাহিনীতে ভীন দেশি রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বেগম জিয়া বলেন, আজকে সন্ত্রাস কারা করছে? সন্ত্রাস করেছে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের লোকজন, তারা মানুষ হত্যা করছে, গুম করছে, পুলিশকে পর্যন্ত ইনসাল করছে প্রতিনিয়ত কাগজে খবর আসছে। সরকারি অফিসারদের অপমান করছে। শিক্ষকদের অপমান করছে।

খালেদা জিয়া বলেন, একটি দলের জনপ্রিয়তা থাকলেই হয় না। তাকে ক্ষমতায় যেতে অনেক গঠনমূলক কাজ করতে হয়। আমি চাই তোমরা সেই কাজটাই করবে।
ছাত্রদলকে সুশিক্ষিত করতে প্রশিক্ষণ কর্মসুচি কথা বলেন খালেদা। তিনি বলেন, এখন থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। যাতে সত্যিকারের মানুষ নেতৃত্ব আসতে পারে। রাষ্ট্রপতির আলোচনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, রাষ্ট্রপতি আমাদেরকে যতবার ডাকবেন ততবারই আমরা যাবো।
বিএনপি চেয়ারপারসন তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আগে ছাত্রদল নেতারা স্লোগান তৈরী করতো এখন সেই স্লোগান নেই কেন? ছাত্রদল থেকে যারা এখন বিএনপিতে আছেন তাদেরকে সাচ্ছা আখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, যারা এদিক সেদিক ঘুরে এসেছেন তাদের মধ্যে ক্ষমতার লোভ রয়েছে।
আওয়ামী নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া। বলেন, আওয়ামী লীগে অনেক নেতা রয়েছে। কিন্তু মহাজোটে এমন কিছু দল রয়েছে যারা কখনো নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারেনি তাই উল্টা পাল্টা বুদ্ধি দিয়ে ভাল নেতাদের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।
গাইবান্ধায় সরকার দলীয় এমপি হত্যাকান্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপি নয়; কোন রাজনৈতিক দলের নেতারা যাতে হত্যাকান্ডের শিকার না হয়। এগুলো বন্ধ করতে হবে।
ব্যাংক কেলেঙ্কারি, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া। বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা নিয়েও কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে আওয়ামী লীগ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আইন পাশ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের আইন পাশের কোন অধিকার নাই। কারণ তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত।

কারো নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, জিয়া পরিবার নিয়ে নোংরা কথা বলা হচ্ছে। আমার কিছু আসে যায় না। মানুষ বুঝবে তারা কেমন। একসময় তাদেরকে দুরে ঠেলে দিবে।
খালেদা জিয়ার দৃষ্টিতে দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর তা ঠেকাতে ছাত্রদল নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশনা দেন তিনি। তিনি বলেন, আমি কথা বললে সব ঘেউ ঘেউ করে উঠে আর সীমান্তে হত্যা হলে নিশ্চুপ থাকে।
চিন্তাভাবনা করে কথা বলতে হবে, কর্মসূচি দিতে হবে। কারণ খুনি সরকার ক্ষমতায় বসে আছে।
সময় মত আন্দোলন করতে হবে জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বিগত দিনে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বিএনপিকে তিন বার ক্ষমতায় নিয়ে এসেছি। দলে কোনো লবিং-গ্রুপিং থাকবে না। নতুন নেতৃত্বে দলকে গুছিয়ে ক্ষমতায় যেতে নিজেদের তৈরি করতে হবে। বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসবে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও ছাত্র সমাবেশে ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা উপস্থিত ছিলেন।