ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আজ পবিত্র ঈদ উল ফিতরের নামাজ চলাকালীন সময়ে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকায় টহলরত পুলিশের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।
এঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছে। নিহত অন্যজন হামলাকারী বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়াও এঘটনায় আরো ৫ জন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন গুরুতরআহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঈদগাহ ময়দান থেকে কয়েকশ’ মিটার দূরে আজিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কনস্টেবলের নাম জহিরুল বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। নিহত হামলাকারীর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। আহত পুলিশ সদস্যদের অবস্থা গুরুতর। তাদের কিশোরগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোশাররফ হোসেন জানান, শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের আগে স্থানীয় আজিমুদ্দিন স্কুলের সামনে টহল পুলিশের উপর শক্তিশালী ককটেল হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়।
আহতদের কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম মারা যায়।
পরে পুলিশ-সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক হামলাকারী নিহত হয়েছে। তিনি আরো জানান, ঘটনার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন। শোলাকিয়া ঈদগাহের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তবে শোয়াকিয়া মাঠে যেখানে দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সেখানে র্যাব, পুলিশ ও আনসারের বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত আছে। ফলে সেখানে নিরাপত্তার কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
তবে আজিমুদ্দীন স্কুল মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় শোলাকিয়ায় আগত মুসল্লিদের মধ্যে ভয়ভীতির সঞ্চার হয়। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কিশোরগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে শোলাকিয়া ঈদগাহ্ ময়দানে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়। এবার ছিল ১৮৯তম ঈদুল ফিতরের জামাত।
সকাল ১০টায় বিশিষ্ঠ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের ঈমামতিতে জামাত অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত ছিল। এতে অংশ নিতে দেশ বিদেশের তিন লাখেরও বেশি মুসুল্লির সমাগম ঘটেছিল। কিন্তু নামাজের আগে ঈদগাহে প্রবেশ পথে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের ওপর বোমা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় পুলিশ পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে গুলি বর্ষণ করে। বেশ কিছু সময় ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
উল্লেখ্য, জনশ্রুতি আছে প্রায় ৭ একর আয়তনের এই মাঠে একবার ২৬৫টি কাতারের প্রতিটিতে ৫'শ জন করে মোট সোয়ালাখেরও বেশি মুসুল্লি একসঙ্গে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠটি সোয়লাখিয়া থেকে পরবর্তিতে শোলাকিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে।