DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

নির্বাচনের খবর লাইভ সম্প্রচারে নিরাপত্তা বাহিনীর ঘোর আপত্তি,কারন কি ?

livetvক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, শনিবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার সাথে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সংস্থাগুলো পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন সাংবাদিকদের বিভিন্ন তৎপরতার উপর বিধিনিষেধ আরোপের দাবি জানিয়েছে।

বিশেষ করে ভোটের দিন টেলিভিশনের ‘লাইভ’ বলে পরিচিত খবরের সরাসরি সম্প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিটি জোরদারভাবে এসেছে।

তবে কমিশন এসব দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে জানাচ্ছে। আগের মতোই বিশেষ ব্যবস্থায় সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে নির্বাচনের খবরাখবর সংগ্রহ করতে পারবে বলে উল্লেখ করছেন শাহনেওয়াজ।

এমাসের শেষ দিকে দুই শতাধিক পৌরসভায় যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার আইনশৃঙ্খলার দিকটি নিয়ে গতকাল ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে সংস্থাগুলোর সাথে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি করে নির্বাচন কমিশন।

livetv1রবিবার সেই বৈঠকের কিছু কিছু আলোচ্য প্রকাশ করলেন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ। ওই বৈঠকে পুলিশ প্রধান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনের অন্যান্য সদস্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, র্যা ব এবং বিজিবির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে ঠিক কোন সংস্থা থেকে ভোটের দিন টেলিভিশনের লাইভ বন্ধের এই দাবিটি এসেছে তা স্পষ্ট করেননি শাহনেওয়াজ।

বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাব এসেছে যে, সরাসরি সম্প্রচার হলে অনেক সময় দেখা যায়, ভুল ব্যাখ্যা যেতে পারে। এটা বিভিন্ন সংস্থা থেকে বলেছে। তবে আমরা এটার মধ্যে গুরুত্ব দেইনি। যতটুকু আমাদের পক্ষে সম্ভব আমরা গণমাধ্যমকে সাহায্য করব।’

ভোটকেন্দ্র এবং পোলিং বুথে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপের দাবিও এসেছে গতকালের বৈঠক থেকে। ‘তারা বলেছে, সাংবাদিকেরা অধিক হারে ঢোকে কিংবা অনেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঢোকে এবং এদিক ওদিক যাওয়ার চেষ্টা করে। তাদেরকে বাধা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।’ তবে এসব ব্যাপারে এখনই কোনো রকম পরিবর্তনে যেতে রাজী হচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। আগে যেভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে সংগ্রহ করা বিশেষ পাস এবং গাড়ির স্টিকার ব্যবহার করে নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে ঘুরে সংবাদ সংগ্রহ করা এবং পোলিং বুথ পর্যন্ত সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ ছিল, এবারও তাই থাকছে বলে জানাচ্ছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ।

তবে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট একটি নীতিমালা করা হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ভুল বোঝাবুঝি?

এদিকে সাংবাদিকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সাথে যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ সৃষ্টি হয়েছে সেটা দূর করতে পদক্ষেপ নেয়ার জন্যও বাহিনীগুলোকে বলা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন শাহনেওয়াজ।

গত এপ্রিল মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন চলাকালে ভোটের খবর সংগ্রহরত সাংবাদিকদের ব্যাপক ভিত্তিতে সরকারী দলের নেতাকর্মীদের হামলা ও পুলিশী হয়রানীর অভিযোগ উঠেছিল।

সেটিকেই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে উল্লেখ করছেন শাহনেওয়াজ। বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলোর একজন সংবাদদাতা সুজয় মহাজন বিবিসিকে বলছেন, সিটি নির্বাচনের সময় তাকে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে পুলিশ ও আনসারের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারধর করেছিল, তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিল এবং ঘন্টাখানেক আটকে রেখেছিল।

বহু সাংবাদিকই তখন এ ধরণের অভিযোগ করেছিলেন, যা আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন একটি তদন্ত করতে বাধ্য হয়। ওই তদন্ত কমিটিতে গিয়ে সাক্ষ্যও দিয়ে এসেছিলেন মহাজনসহ অন্যান্য সাংবাদিকেরা। পরে অবশ্য তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছিল তাতে দেখা গেছে, এ ধরণের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সিটি নির্বাচনের মতো এবারও সাংবাদিকদের তরফ থেকে ওই ধরণের কোনো অভিযোগ যাতে না আসে সে ব্যাপারে যথেষ্টই তৎপর নির্বাচন কমিশন।

মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলছেন, ‘আমরা বলেছি, গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে সেটা দূর করতে হবে।’ অবশ্য সাংবাদিকদেরও বাড়াবাড়ি না করবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!