DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলঃ শহীদ জিয়ার রেখে যাওয়া অমূল্য সম্পদ

ziaurবাংলাদেশের রাখাল রাজা,সততার উজ্জীবিত প্রতীক, হতদরিদ্র শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাঁর বিধবা স্ত্রী ও দুই এতিম সন্তানদের জন্য ধন- সম্পদ, বাড়ি- গাড়ি কিছুই রেখে যেতে পারেননি।

কিন্তু রেখে গেছেন নিজের অর্জিত সকল সুনাম, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মতো তুমুল জনপ্রিয় ঐতিহাসিক একটি সংগঠন এবং নিজের হাতে গড়া বাবলু, নীরু, ইলিয়াস, দুদু ও রিপন ভাইয়ের মতো অত্যন্ত বিশ্বস্ত কিছু মেধাবী সাহসী সংগঠককে।

এই কালজয়ী ছাত্রদল নেতারাই ভূমিহীন, সম্পদহীন ও অসহায় জিয়া পরিবারকে বুক পেতে আগলে রাখতে কার্পণ্য করেননি। অসহায় বেগম জিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আশির দশকের অদম্য সাহসী কালজয়ী ছাত্রদল নেতারা শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করেছিলেন।

শহীদ বাবলু ভাই বেগম জিয়ার রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। রিজভী ভাই গুলি খেয়ে ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেও, এখনো সেই যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছেন। ইলিয়াস ভাই নিজের জন্মদাতা পিতার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি এবং দলের জন্য তাকে করা হয়েছে গুম। দুদু ভাই সেসময় দুই বছর কারাগারে ছিলেন। নীরু ভাই নিজেও সবচাইতে বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন।

 

এরকম শত শত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের শহীদ জিয়ার প্রতি শর্তহীন ভালোবাসা ও বেগম জিয়ার প্রতি অন্ধ আনুগত্যের কারণেই রাজনীতির দুর্গম পথ চলতে বেগম জিয়ার সমস্যা হয়নি।

ছাত্রদলের হাজার হাজার ত্যাগী কর্মীদের মহান আত্ম ত্যাগের বিনিময়ে একজন অতি সাধারণ গৃহিনী বেগম জিয়া "আপোসহীন" নেত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে সক্ষম হয়েছেন।

শহীদ বাবলু, শহীদ খালেদ, শহীদ মাইনুদ্দিন, শহীদ জেহাদ ও শহীদ জনির মতো হাজারো জনিদের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে বেগম জিয়া দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এবং শহীদ জিয়া পরবর্তী সময়ে বিএনপি দেশ পরিচালনা করার সুযোগ পায়।

এইসব শহীদ ছাত্রদল নেতারা শহীদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, বেগম জিয়ার নেতৃত্বে হাসতে হাসতে বন্দুকের নলের সামনে বুক পেতে দিয়েছেন। কিন্তু খালি হয়েছে মায়ের বুক। এইসব শহীদ কর্মী ভাইদের দুঃখিনী মায়ের চোখের নোনা পানি এখনো শুকায়নি। এখনো সেইসব মায়েরা প্রিয় সন্তানের সাদাকালো ছবিতে হাত বুলিয়ে নীরবে চোখের পানি ফেলে, নামাজে বসে আদরের ছেলের জন্য দোয়া করে।

 

এভাবেই গত তিন যুগ থেকে হারানো ছেলেদের মনে করে দুঃখিনী মায়েরা চালিয়ে যাচ্ছেন একাকী নিজস্ব স্মৃতির সংগ্রাম। রক্তস্নাত সেই গৌরবময় ইতিহাসের মহানায়করা আজ অনেকটাই অবহেলিত ও অপরিচিত। প্রিয় চেনা সেই মুখগুলো আজ বড় বেশী অচেনা মনে হয়। রিজভী ভাই এখনো পায়ের যন্ত্রণা দগ্ধ হন, কিন্তু হারিয়ে যান আশির দশকের সেই দিনগুলোতে। ইলিয়াস ভাইয়ের মাতা সূর্য্যিযান বিবি ছেলের পুরনো ছবিতে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকেন। শহীদ বাবলু ভাইয়ের প্রিয় মাতা গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে ছেলেকে দেখে কেঁদে কেঁদে বাকি রাতটা জেগে থাকেন। নীরু ভাই পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই ফিরে যান চব্বিশ বছর আগের সেই অগ্নি ঝরা সময়ে।

 

স্মৃতি বড়ই বেদনার। সরব কিংবা নীরব স্মৃতি চারণ বড় বেশী ভাবুক করে তুলে নিজেদের। এইসব কালপুরুষরা কখনোই জীবনের হিসাব মেলান নাই। সারাটা জীবন শুধুই দিয়ে গেছেন। কিন্তু কখনোই প্রাপ্তির আশা করেননি। এরাই হচ্ছেন বেগম জিয়ার জন্য শহীদ জিয়ার রেখে যাওয়া সবচাইতে মূল্যবান সম্পদ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!