DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

অডিও/ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও তার বক্তব্য বিকৃৃতভাবে প্রচারের নিষ্ফল দাবী এইচ টি ইমামের

1416207994প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম দাবি করেছেন, আমার বক্তব্যকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যার কারণে জাতি বিভ্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোনো সুযোগ নেই।

তবে অনুষ্ঠানের প্রত্যক্ষ দর্শীগন এবং ধারনকৃত অডিও রেকর্ডিং থাকার পরও এ ভাবে বক্তব্য অস্বিকার করার কোনো সুযোগ আছে বলে সংশ্লিষ্ট গন মনে করেন না।




সোমবার সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজ বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।

 


এইচ টি ইমাম বলেন, ধূম্রজাল সৃষ্টি করে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বাধা দেয়ার ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। আমার বক্তব্য যদি পুরো প্রচার করা হয় তাহলে সব বিভ্রান্তির অবসান হবে।




সম্প্রতি ছাত্রলীগের এক সভায় দেয়া বক্তব্যের দায়ে সারাদেশে সমালোচিত হন প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা। ওই বক্তব্যের দুটি অংশে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চাকরির সুবিধা দেয়া এবং ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তত্কালীন প্রশাসনের অবস্থা তুলে ধরেন।

 

 




ছাত্রলীগকে বাড়তি সুযোগ দেয়া নয়, ভালোভাবে পড়াশোনা করার পরামর্শ দিয়েছেন দাবি করে এইচ টি ইমাম বলেন, সরকারি চাকরিতে মেধাবীরা আসবেন এটাই নিয়ম। ওই দিন আমি যা বলেছি তা হচ্ছে, যারা লিখিত পরীক্ষায় উন্নীত হবেন তারাই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি পাবেন। লিখিত পরীক্ষায় ভালো করলে পরে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এবং তখন কীভাবে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলা যায় সে ব্যাপারে আমি তাদের পরামর্শ দিয়েছিলাম। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১২ নভেম্বর আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলাম, একটি হলো লিখিত পরীক্ষা ভালো করতে হবে। কারণ ১০০০ নম্বর হচ্ছে লিখিত পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষার পর ভাইভাও ভালো করতে হবে। এ জন্য যা যা করা দরকার তাই করব।

 

প্রয়োজনে আমি নিজেই তোমাদের কোচিং করাব। ভাইভায় গিয়ে কীভাবে প্রশ্ন-উত্তর, সালাম দিতে হবে সেটা  শেখাব। তিনি জানান, বিএনপি আমলে একটি বিশেষ ভবনের সুপারিশে বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় ছাত্রদলের ক্যাডারদের পাস করিয়ে দিত। আমাদের সে অভিপ্রায় নেই। তাই সাহসিকতার সঙ্গে বলেছি, লেখাপড়া শিখে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে।




৫ জানুয়ারি নির্বাচনে প্রশাসনের অবস্থান বিষয়ে তিনি বলেন, ওই সময় আমি সরকারে কেউ ছিলাম না। তাই প্রশাসনে মোবাইল কোর্ট করানোর কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না। তবে আমি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করেছি। সেক্ষেত্রে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ করতে হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে হয়েছে। সাবেক এই আমলা দাবি করেন, আমি যা করেছি তা নির্বাচনী আইন বিধি মেনেই করেছি। আর ‘আমাদের রিক্রুট করা’ বলতে আমি প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বুঝিয়েছি। কোনো দলীয় পরিচয় উল্লেখ করিনি।




গত রবিবার প্রচার সেলের মিটিং প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, আমি মিটিংটি ডাকিনি। ডেকেছেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আমি আজকের সংবাদ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত্ না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি অসুস্থ। অতিরিক্ত পরিশ্রম করছেন। তার বিশ্রাম দরকার। রবিবার সারাদিনই প্রধানমন্ত্রী বিশ্রামে ছিলেন। অল্প সময়ের জন্য সংসদে গিয়েছিলেন। তাই তার সঙ্গে দেখা হয়নি। তবে সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। তিনি প্রকারান্তরে আমাকে আমার বক্তব্য ব্যাখ্যা করতে বলেছেন।




নীরবতার কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রচার উপপরিষদের চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দেয়ার পরদিনই তিনি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজের সঙ্গে এক আলোচনায় টেলিফোনের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন। বক্তব্যের কারণে পদত্যাগ করার প্রশ্নই ওঠে না বলে মন্তব্য করেন এইচ টি ইমাম।




তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, খণ্ডিতভাবে নয়, বস্তুনিষ্ঠভাবে আমার সামগ্রিক বক্তব্যের সারমর্ম শুনে ও বুঝে আপনারা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরবেন। ছাত্রলীগের সভায় তিনি প্রায় ৪৭ মিনিট বক্তব্য রাখেন বলে জানান।




বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রতি ইঙ্গিত করে এইচ টি ইমাম বলেন, তারা নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। তারা ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল, মানুষ হত্যা করেছিল। নির্বাচন বানচালের জন্য তাদের অপচেষ্টা ও নাশকতা ঠেকাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করেছেন। নির্বাচনী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সবাই দায়িত্ব নিয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সফল করেছেন। তাই তিনি তার বক্তব্যে তাদের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু সেই বক্তব্য নিয়ে একটি মহল রং চড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন এইচ টি ইমাম।


এইচ টি ইমাম আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা নাশকতা করেছে, ঠেকাতে না পেরে জনরোষের ভয়ে গর্তে ঢুকেছে, তারাই তার বক্তব্যের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে মিথ্যার ডুগডুগি বাজাচ্ছে। কিন্তু তা ব্যর্থ হতে বাধ্য।




সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগের ডা. বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মৃণাল কান্তি দাস, অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!