DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ফরিদগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, ঈগল প্রতীকের কর্মীরা এলাকা ছাড়া

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ফরিদগঞ্জে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এতে দেলোয়ার হোসেন নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা প্রেরণ করেছেন। কয়েকটি বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে গেছেন অনেকে। নির্বাচনের রাতে ও মঙ্গলবার বিকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে রূপসা (উত্তর) ইউপি’র কয়েকটি গ্রামে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান কাউছারুল আলম কামরুল হামলার ঘটনা জেনেছেন ও আহতের সঙ্গে কথা বলেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বদিউজ্জামানপুর গ্রামের পালবাড়ীর দেলোয়ার হোসেন (৪০)। মঙ্গলবার বিকালে তিনি রবিউলের দোকানের পেছনে নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এসএস পাইপ ও লাঠিসোঁটা হাতে একদল যুবক অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। তাকে বেদম মারধর করে।

এতে তার ডান হাত ও বাম পা’র হাঁটুর হাড় ভেঙে গেছে। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে আত্মীয়-স্বজন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। যথাযথ চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। এ ছাড়া নির্বাচনের রাত আনুমানিক একটার দিকে হামলা হয় গাব্দেরগাঁও গ্রামের পাটোয়ারীবাড়ীর স্বপনের ঘরে। হামলাকারীরা বাড়িতে পটকা ফাটিয়েছে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। তার দোচালা টিনের ঘরের বেড়ার ক্ষতি করে। ওই সময় স্বপন (৪০) স্ত্রী আইরিন (৩৬), কলেজ পড়ুয়া ছেলে আজমীর (১৮) ও সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া কন্যা সাদিয়া আক্তার ঘরে ছিলেন। পুনরায় মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে আটটায় স্বপনের বাড়িতে হামলা হয়।  এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্বপনের মা রহিমা বেগম (৭০)। স্ট্রোকের রোগী রহিমা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
বুধবার বিকালে প্রবাসীর স্ত্রী আঁখি (৩৫) বলেন, আতঙ্কে আমার শিশুকন্যা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বুধবার সকালে তাকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ এনেছি। অপর প্রবাসীর স্ত্রী আসমা আক্তার (৩৬) বলেন, আমাদের জীবন ও বাড়ি-ঘরের নিরাপত্তা চাই। স্বপন, ১৪ নং ফরিদগঞ্জ (দক্ষিণ) ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, আমি ঈগলের নির্বাচন করেছি। তাই নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা আমাদের বাড়িতে হামলা করেছে। তবে, তিনি নিরাপত্তাজনিত কারণে কারও নাম বলতে চাননি। মুঠোফোনে বলেন, আমি এখন আত্মগোপনে আছি।


এদিকে, দেলোয়ারের স্ত্রী সায়েরা বেগম রেবু (৩০) জানিয়েছেন, আমার স্বামীকে মেরে আধমরা করে দিয়েছে। তিনি ঈগলের পার্টি করেছেন, তাই তাকে পাশের বাড়ির নৌকার কর্মীরা মেরেছে। হামলাকারীদের নাম জানতে চাইলে তিনি আতঙ্কে কারও নাম বলতে চাননি। তিনি জানান, আমার শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ভাসুর কেউ নেই। চারজন কন্যাসন্তান নিয়ে আমার সংসার। স্বামী দেলোয়ার হোসেন চাষবাস ও একটি মুরগির খামার পরিচালনা করেন। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, এখন আমাদের কী হবে।

সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য রতন জানিয়েছেন, বদিউজ্জামানপুর ব্রিজ এর কাছে আমার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। একদল যুবক মঙ্গলবার রাতে আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছে- দোকান খুলবেন না। এলাকা থেকে চলে যান। আবার দেখলে পিটানো হবে। তিনি বলেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় এলাকা ছেড়ে দিয়েছি। এছাড়া, মঙ্গলবার দুপুরে এলাকায় আরও কয়েকজনের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের অন্তত ১০ জন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। এ ছাড়া, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য ইদ্রিস (৪৪) এর নিকটাত্মীয়রা অভিযোগ করেছেন, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে নৌকা প্রতীকের একদল কর্মী-সমর্থক ঢুকেছে। তারা মেম্বারকে খুঁজেছে। তখন, তিনি বাইরে ছিলেন। খবর পেয়ে, ইদ্রিস মেম্বার গোপনে ঢাকা চলে গেছেন বলে তারা জানিয়েছেন। এ ছাড়া, শরীফ নামের দুই যুবক এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছেন বলে তাদের পরিবার সদস্যরা জনিয়েছেন।  এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কল দিলে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম কল রিসিভ করেননি। তবে, থানা থেকে জানা গেছে, তিনি কোনো একটি জরুরি কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!