DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো শঙ্কা নেইঃসালমান এফ রহমান

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন মিডনাইট প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডা কনফারেন্স রুমে কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের (সিডব্লিউইআইসি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সালমান এফ রহমান বলেন, নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের কনসার্ন পাইনি। উল্টো দেখছি- সব ব্যবসায়ী বলছে, গত ১৫ বছর ধরে যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পেয়েছেন, তাতে তারা খুবই খুশি। তারা বলছেন, আমরা ব্যবসাটা খুব আরামে করতে পেরেছি। তারা মনে করছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধান আছে, গণতন্ত্র আছে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হয়ে এসেছে, আবার হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে। এটাই বাংলাদেশের বড় শক্তি। 

 

বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে জাপানি প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশিরা বলে তাদের সমস্যা আছে।

 

জাপানি বিনিয়োগকারীদের কথা আপনারা বলেছেন। তাদের সমস্যা আমরা সমাধান করবো। জাপানের অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। যদি আমাদের অবস্থা অতই খারাপ থাকতো, তাহলে সবাই এখানে আসতে চাইতো না। কেউ বলতে পারবে না, বিশ্বের কোন দেশে ব্যবসার পরিবেশ শতভাগ ঠিক আছে? সব দেশে কোথাও না কোথাও…অনেক দেশে অভ্যন্তরীণ সমস্যাও হয়। 

প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা আরও বলেন, যারা এখানে বিনিয়োগ করেছে বা যারা করতে চায় সবাই দেখছে, আগে যারা বিনিয়োগ করছে তারা সবাই ভালো রিটার্ন পাচ্ছে। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটা ভালো জায়গা। তিনি বলেন, আগামী ১৩ ও ১৪ই সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো আমরা বাংলাদেশে কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম (সিটিআইএফ) হোস্ট করছি। কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল (সিডব্লিউআইসি) দ্বারা আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে যৌথভাবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেড আই ফাউন্ডেশন সামিট করতে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী এটার উদ্বোধন করবেন। মোট ১২টি সেশনে বাংলাদেশ ও কমনওয়েলথের বিভিন্ন সদস্য দেশ  থেকে আগত সরকারি ও বেসরকারি খাতের শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। কমনওয়েলথ সদস্যের বাইরের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নিবেন। এতে আমাদের নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে। 

তিনি বলেন, এই সামিটের প্রধান উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে ফোকাসে আনা। এখন বিদেশি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের বিষয়ে অনেক আগ্রহী। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে। আমরা বিদেশে গেলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলে যে, তোমাদের দেশের গ্রোথটা খুবই অসাধারণ। সামিট করার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে এসে নিজের চোখে সব দেখবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচিত হবে। 

আগামীতে ব্যাংকের সুদহার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে সুদ বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের ব্যাংকগুলোতেও সুদের পরিমাণ বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী যখন ৯ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, তখন আমাদের দেশে সুদের হার ছিল ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ। আর তখন আমাদের পাশের দেশগুলোতে সুদের হার কম ছিল। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিকভাবে সুদের হার বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে সুদের হার কমলে দেশেও কমবে। তিনি বলেন, সামিট করার মাধ্যমে আমাদের দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। একইসঙ্গে ব্যবসাও বাড়বে। ফলে আমরা যদি রপ্তানি বাড়াতে পারি তাহলে দেশের রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করবে।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কমনওয়েলথে যোগদানের পর থেকে বাংলাদেশ সংগঠনটির একটি সক্রিয় অংশ ছিল। ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির এক অসাধারণ সুযোগ করে দেবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, ফোরাম চলাকালীন বাংলাদেশ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সামনে তার বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগগুলো প্রদর্শন করতে সক্ষম হবে। এটি সবার জন্য ইতিবাচক হবে। বিভিন্ন আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জনের কথা উল্লেখ করে, উপদেষ্টা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত সাড়ে ১৪ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে সালমান এফ রহমান বলেন, তারা আসন্ন ফোরামে উপস্থিত থাকার জন্য সকল কমনওয়েলথ দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং নাইজেরিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা এবং ঘানার মতো দেশ ইতিমধ্যেই তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে বেশ কিছু স্ট্যার্ট-আপ গড়ে উঠেছে এবং তারা আগামী ফোরামে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকেও নজর দেবে।

কমনওয়েলথ হলো ৫৬টি দেশের সমন্বয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা- যা একটি সাধারণ মূল্যবোধের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ এবং এ দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ লোক বসবাস করে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথের ৩৪তম সদস্য হিসেবে যোগদান করে।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!