DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বাবরির মসজিদের মতো এবার তাজমহল গ্রাসের চেষ্টায় হিন্দুত্ববাদীরা!

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের মতো এবার আগ্রার তাজমহলও গ্রাস করার চেষ্টা করছে ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।

প্রেমের প্রতীক এই হেরিটেজ স্থাপত্যে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করে দেখানোর আর্জি নিয়ে পিটিশন দায়ের করেছেন হিন্দু্ত্ববাদী ওই দলটির এক নেতা।

তাজমহলের ২০টি বন্ধ ঘরে কী রয়েছে জানতে এবার এলাহাবাদ হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছে ওই পিটিশন। একাংশের দাবি, তাজমহলের বন্ধ ঘরগুলির ভিতর হিন্দু দেবদেবীদের মূর্তি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এই দাবির সত্যতা খোঁজার আর্জি নিয়েই এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ ভারতীয় জনতা দলের অযোধ্যার মিডিয়া ইন-চার্জ ডঃ রজনীশ সিং। কেসটি আদালতের সামবে পেশ করেছেন অ্যাডভোকেট রুদ্র বিক্রম সিং।

রজনীশ সিংয়ের দাবি, ”তাজমহলের ওই ২০ রুমে কী রয়েছে তা নিয়ে বহুদিন ধরেই চলে আসছে বিতর্ক। ওই ২০ ঘরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। আমাদের স্থির বিশ্বাস ওই ঘরগুলিতে হিন্দু দেবদেবী ও হিন্দু ভাস্কর্য তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে।” মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ”আমি হাইকোর্টে একটি পিটিশন ফাইল করে আর্জি জানিয়েছি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দিয়ে ঘরগুলি খুলে দেখানো হোক। কিছু না থাকলে বিতর্কের ঝড় থামাতে ওই ঘরগুলির খুলতে তো কোনও বাধা নেই।”

রজনীশের দায়ের করা ওই পিটিশন অনুযায়ী এই বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। দাবি, আদালত রাজ্য সরকারকে এএসআই কর্মকর্তাদের দিয়ে তাজমহলের ওই ঘরগুলি খুলিয়ে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দিক। একইসঙ্গে ঘরগুলিতে কোনও হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি, ভাস্কর্য কখনও রাখা হয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হোক। সত্য যাচাইয়ে কোনও ক্ষতি নেই বলে দাবি বিজেপি নেতার।

তাজমহলকে ঘিরে এই বিবাদ আজকের নয়, বহু পুরনো। ২০১৫ সালে আদালতে ৬জন আইনজীবী মামলা দায়ের করে দাবি করেছিলেন তাজমহল আসলে ছিল একটি শিব মন্দির। ২০১৭ সালে বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার একই দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দ্বারস্থ হন এবং তাকে স্বশরীরে তাজমহলে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আর্জি জানান। ২০১৯ সালে বিজেপি নেতা অনন্ত কুমার হেগড়ের দাবি ছিল আরও চাঞ্চল্যকর। তিনি দাবি করেছিলেন, তাজমহল আসলে শাহজাহান তৈরি করেননি, তিনি রাজা জয়সিনহার থেকে কেড়ে এনেছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে এই সব বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে একটি এফিডেফিট ফাইল করে বলে তাজমহল একটি স্মৃতিসৌধ, যা মোঘল সম্রাট শাহজাহান তার পত্নী বেগম মুমতাজের স্মৃতিতে তৈরি করিয়েছিলেন।

সম্প্রতি তাজমহলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল অযোধ্যার ছাবনি এলাকার জগৎগুরু পরমহংসাচার্য মহারাজকে। তার তিন শিষ্যকে নিয়ে তিনি তাজমহল দর্শনে পৌঁছলে ওই সাধুর পথ আটকায় নিরাপত্তারক্ষীরা। তার দাবি, তাজমহলের নাম আদতে ছিল, ‘তেজো মহালয়।’ জগৎগুরু পরমহংসাচার্য মহারাজের সংযোজন, ”এটি তাজমহল নয়। এটি আসলে ভগবান শিবের মন্দির। মোগলরা এটিকে তাজমহল বলা শুরু করেছিলেন। যা সম্পূর্ণ ভুল।”

সূত্র: টিওআই।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!