DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

যে মুহূর্তে তারেক রহমান বলবেন,এই অবৈধ সংসদ থেকে পদত্যাগ করবঃ হারুন-অর-রশিদ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুন-অর রশিদ বলেছেন,দলের নির্দেশে আমি পার্লামেন্টে যোগদান করেছি।  আমি সাংবাদিক বন্ধুদের উদ্দেশে আজকে বলতে চাই, জাতির উদ্দেশে বলে দিতে চাই, যে মুহূর্তে তারেক রহমান বলবেন, এই অবৈধ সংসদ থেকে পদত্যাগ করে বেরিয়ে আসব। আপনারা শুধু প্রস্তুত হোন যুদ্ধের জন্য। লাঠি লাগে, অস্ত্র লাগে, যা কিছু লাগে তাই নিয়ে আমরা প্রস্তুত হব, ইনশাআল্লাহ। মানুষ আগুন হয়ে আছে।

মঙ্গলবার বিকালে রাজশাহী মহানগরীর মাদ্রাসা ময়দান সংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারের পাশে বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির  এই সংসদ সদস্য বলেন, আমিও মধ্যরাতের নির্বাচনের একজন সংসদ সদস্য। আমি দলের নির্দেশে পার্লমেন্টে যোগ দিয়েছি। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কথা বলছি। 

এমপি হারুন বলেন, মানুষ আগুন হয়ে আছে। নির্বাচনের নামে কী প্রহসন হচ্ছে। আমি বাংলাদেশের অন্য কোনো জায়গার কথা বলব না। যে মাটিতে দাঁড়িয়ে সমাবেশ করছি। প্রথম ধাপে নির্বাচন হয়েছিল কাটাখালী পৌরসভায়। সেখানে আমাদের মেয়র প্রার্থী সিরাজুল। লজ্জা লাগে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী পেয়েছে ১৭ হাজার ২৪০ ভোট আর বিএনপির প্রার্থী পেয়েছে মাত্র ৭৬ ভোট। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?
তিনি বলেন, আরেকটি পৌরসভা হচ্ছে চাটমোহর। সেখানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী পেয়েছে ১৭ হাজার ২৫২ ভোট আর বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষে পেয়েছে ৮৫ ভোট। এটা কি বিশ্বাস করা যায়? এই সরকারের অধীনে কি আর ভোট করা যায়? ইভিএম চলবে না। এই সরকারের অধীনে কোনো ভোট চলবে না।
এমপি হারুন আরও বলেন, আমরা এখনো যারা ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন করতে সুড়সুড় করছি। কোনো লাভ হবে না। পঞ্চম ধাপের পৌরসভায় চারঘাটের নির্বাচনী কেন্দ্রে বোমা বিস্ফোরণ হয় নাই? কারা করেছে বোমা বিস্ফোরণ? এরপরও কি আমাদের নির্বাচনে যেতে হবে?
তিনি বলেন, আমি রাজশাহীর মাটিতে পরিষ্কারভাবে পুলিশ ভাইদের বলে দিতে চাই- আগামী ৩০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ খুলবে। প্রস্তুত হোন। পুলিশের ছেলে যারা, যারা বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে পড়ালেখা করে। তাদেরকে মিছিলের সামনে আমরা নেব। দেখি পুলিশের লাঠি তাদের গায়ে পড়ে কি না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এমপি হারুন বলেন, আপনারা তাদেরকে (পুলিশের ছেলে) চিহ্নিত করবেন। তাদেরকেই আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের কাতারে আমরা নিয়ে আসব।
তিনি বলেন, পুলিশ ভাইদের উদ্দেশে বলছি- আপনারা এ দেশের সন্তান। আইন, সংবিধান অনুযায়ী আপনারা চলবেন। পুলিশ কমিশনার, আইন আপনাকে দিয়েছে? কোন আইনে আপনি রাজশাহীর এই সমাবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন?
তিনি বলেন- এই রাজশাহী আমার প্রাণ, এই রাজশাহীতে আমার জন্ম, এই রাজশাহী আমার বেড়ে উঠার স্মৃতি, এই রাজশাহী আমার স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। এই রাজশাহী আমার রাজনীতি, এই রাজশাহী আমার অধিকার।
এমপি হারুন বলেন, আজকে আমি এই সমাবেশে যোগ দিতে আমার বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছি। এই সমাবেশ থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। গতকালকে (সোমবার) রাজশাহীর চারদিকে বাস-ট্রাক সমস্ত কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।আমি বিস্মিত হয়েছি।  আজকে যখন আমি সকালে রওনা দিয়েছি, চাপাইনবাবগঞ্জে আমার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই পুলিশ বাধা দিয়ে বলে যেতে দেওয়া যাবে না।  আমি বলেছি, আমাকে গ্রেফতার করতে হবে, আর না হলে আমি যাবই।  এরপরে গোদাগাড়িতে বাধা দিয়েছে। রাজাবাড়ীতে এসে দেখলাম শত শত মানুষ গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছে। যারা ডাক্তারের কাছে আসতে চায়, হাসপাতালে আসতে চায়  ।  সব পথকে বন্ধ করে দিয়েছে এই সরকার।
তিনি বলেন, আজকের এই সমাবেশ হচ্ছে লুটেরাদের উৎখাত করার সমাবেশ। আজকের এই সমাবেশ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আমাদের সমাবেশ। আজকের এই সমাবেশ হচ্ছে দেশে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার সমাবেশ।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ ঢাকা থেকে আন্দোলন জোরদার করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সাত দিনের মধ্যে সরকারের পতন দেখতে পাব। এর জন্য ঢাকার রাজপথে রক্ত দিতে হবে। রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রামে আন্দোলন করে কিছু হবে না। ঢাকাকে সুসংগঠিত করতে হবে।’
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।
এছাড়াও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সামসুল হক প্রামাণিক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। সমাবেশে বিভাগের আট জেলার সভাপতি ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশ নেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!