DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ডাক টিকেট ও খাম অবমুক্ত!!!!!

 ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে একটি স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, যেখানে লেখা হয়েছে ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’। আর তা নিয়েই সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (৪ জানুয়ারি) এই স্মারক ডাক টিকিটটি অবমুক্ত করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ওই অনুষ্ঠানে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন, টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মহসীনুল আলম এবং ডাক অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হারুনুর রশিদ বক্তব্য রাখেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল। আর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী লেখা সম্বলিত এই ডাক টিকিটটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
 

সমালোচনাকারীদের মন্তব্য হচ্ছে, পাকিস্তান আমলে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা পেলেও বর্তমান সময়ে এসে ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উল্লেখ না করে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিষয়টিই উল্লেখ করা উচিত ছিল।

স্মারক ডাকটিকিট ফেসবুকে আপলোড দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম ইস্তেজা চৌধুরী মনি লিখেছেন, ‘এটা ভুল? কোনোভাবেই ভুল না। যে ডিজাইন করেছে, যে অনুমোদন দিয়েছে, সবাই জেনে বুঝে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। সাধে কি বলি যে, আওয়ামী লীগ সবাই হতে পারে কিন্তু ছাত্রলীগ সবাই হতে পারে না। ছাত্রলীগের রাজনীতি না করা এইসব আওয়ামী লীগাররা বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ কোনো কিছু ধারণ করে না, করতে পারে না। তাদের ধ্যান জ্ঞান রাজনীতি বাণিজ্য।’


গণজাগরণ মঞ্চকর্মী এফ এম শাহীন লিখেছেন, ‘ছাত্রলীগকে মুসলিম ছাত্রলীগে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ডাক বিভাগের সকলকে গণসংবর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার! এটা ভুল? কোনোভাবেই ভুল না। তারা জেনে বুঝে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে।’
 

শঙ্খনীল দেব নামের একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগে ফিরিয়ে নেওয়ার মতো মূর্খতার জন্য ডাক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সকল আমলা কামলাকে জবাব দিতে হবে। এত দুঃসাহস এরা পায় কোথায়? এটা ভুল হতেই পারে না। এটা পরিকল্পিত ও ইচ্ছাকৃত নোংরামি মাত্র। এদের ঘাড়ে ধরে কারণ দর্শানো উচিত।’

ফেসবুকে শাহ রিয়াদ আনোয়ার শুভ লিখেছেন, ‘৪ জানুয়ারি কি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী? আগামী ২৩ জুন কি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হবে?'

 

এমন ভুলের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না। ডাক বিভাগের মহাপরিচালক এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।’

আর ডাক বিভাগের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘এর আগের ডিজির সময় একটি কমিটি হয়েছিল। তখন এই ডাক টিকিট প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়। আর ডাক টিকিট প্রকাশের নিয়ম হচ্ছে প্রতিষ্ঠার সময় যে নাম ছিল তা উল্লেখ করা। যারা সমালোচনা করছেন তারা না জেনে সমালোচনা করছেন।’

 

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আপনি কি ইতিহাস মুছে ফেলবেন? কেউ যদি ইতিহাস না জানে তবে আমার কিছু করার নেই। ছাত্রলীগ পূর্বপাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ হিসাবেই প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পরে সময়ের পরিক্রমায় নাম পালটায়। আর ডাক টিকিট ইতিহাস তুলে ধরে। আমরা ইতিহাসের সত্যটাই তুলে ধরেছি।’ স্মারক ডাক টিকিটে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উল্লেখ করার বিষয়টি ভুল নয় বলেও মন্তব্য তার।

মন্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন  বলেন, ‘এখনকার সময়ে এটি করতেই পারে না। এখন কী আমরা পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবো? পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ হিসাবে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে তো সংগঠনটির নাম পরিবর্তন হয়েছে। তাই এটি করা উচিত হয়নি।’

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (৪ জানুয়ারি) এই স্মারক ডাক টিকিটটি অবমুক্ত করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ওই অনুষ্ঠানে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন, টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মহসীনুল আলম এবং ডাক অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হারুনুর রশিদ বক্তব্য রাখেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল। আর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী লেখা সম্বলিত এই ডাক টিকিটটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!