DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

প্রহসনের সরকারকে গ্রহনযোগ্য করতেই গণভবনে চা-চক্র : ড. মঈন খান

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রহসনের সরকারকে জনগনের কাছে গ্রহনযোগ্য করতেই গণভবনে চা-চক্রের আয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচনের প্রহসন আমরা দেখেছি, তার মাধ্যমে আমরা এদেশে যে একটি প্রহসনের সংসদ আমরা দাঁড়া করিয়েছি এবং যে সংসদের মাধ্যমে এদেশে একটি নতুন করে সরকারও গঠিত হয়েছে। সেই সরকারের সত্যিকারের অবস্থান কোথায়- সেটা আমরা যদি নাও জানি, সরকার নিজে কিন্তু ঠিকই জানে। আর নিজে ঠিকই জানে বলেই আজকে সরকার ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে কিভাবে তাদের এই যে প্রহসনের সরকার, সেই সরকারকে মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তোলা যায়।

তিনি বলেন, মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য করার এই যে প্রচেষ্টা, সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই চা-চক্রে (গণভবনে) আয়োজন করা হয়েছে। এটাই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে। তারা জানে ২৯ ডিসেম্বর রাতে ও ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে কী নাটক ঘটেছিলো তা সকলে অবহিত আছেন।

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে একাদশ নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের চা-চক্রের আমন্ত্রণ করেছেন। বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতাদেরও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচনের ভোট কারচুপির সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি তুলে ধরে আবদুল মঈন খান বলেন, এটা কোনো নির্বাচন হয়নি, এটা হচ্ছে একটা প্রহসনের নির্বাচন, একটা ভুয়া নির্বাচন। সেই ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ আজকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে সেই সংসদ বাংলাদেশের জনগনের প্রতিনিধিত্ব করে না। কার প্রতিনিধিত্ব করে সেটা আপনারাই বুঝে নিতে পারেন, আমার অধিকতর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নাই। এই সংসদ আজকে প্রতিনিধিত্ব করে সন্ত্রাসীদের, যে সন্ত্রাসীরা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে সারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তারা ভোট জালিয়াতি করে নিজেদের বিজয়ী বলে ঘোষণা করেছে।

তিনি বলেন, আমাকে কয়েকজন রাষ্ট্রদূত প্রশ্ন করেছিলেন বিএনপির যারা নির্বাচিত হয়েছেন, পতারা কী সংসদে যাবে না। আমি বললাম কেউ যদি নির্বাচিত হয় সংসদে যাবে না কেনো? কিন্তু আপনারা (রাষ্ট্রদূত) কী জানেন না। বিএনপির তো কেউ নির্বাচিত হয়নি, তাদেরকে নির্বাচিত দেখানো হয়েছে। যাদের নির্বাচিত দেখানো হয়েছে তাদের সংসদে যাওয়ার কি রাইট রয়েছে- সেই প্রশ্নের জবাব দেন তাহলে নিশ্চয় তারা সংসদে যাবেন। আসলে এই নির্বাচনে কে জয়ী কে বিজয়ী সেটা কোনো প্রশ্নই নয়। নির্বাচনে যাদেরকে জয়ী দেখানো হয়েছে তারা জয়ী হয়েছেন, এই নির্বাচেন যাদেরকে পরাজিত দেখানো হয়েছে তারা পরাজিত হয়েছেন এবং সেটা করা হয়েছে শুধু ভোট রিগিংয়ের মাধ্যমে নয়, এটা করা হয়েছে সন্ত্রাসের মাধ্যমে।

১১ ডিসেম্বর নির্বাচনের প্রচারনার প্রথম দিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তার ওপর হামলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার ওপরে, মহাসচিবের ওপরে এভাবে বাংলাদেশে যে কত জায়গায় আক্রমন হয়েছে এবং সেই আক্রমন নির্বাচনের দিন পর্যন্ত অব্যাহতভাবে চলেছে। এখানে কোনো নির্বাচন হয়নি বাংলাদেশে। এভাবে কোনো দেশে নির্বাচন হতে পারে না। শুধু বিএনপি নয়, যারা বিএনপির সমর্থক তারা নয়, আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে জিজ্ঞাসা করুন তাকে বলুন আপনারা বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি- এটা কেমন নির্বাচন হয়েছে। তারা নিজেরাই উত্তর দেবে গোপনে আপনার কানে কানে বলবে, প্রকাশ্যে বলবে না। প্রকাশ্যে বলবে চমতকার নির্বাচন। চমতকার নির্বাচনে কী ধারা আপনারা দেখেছেন ১৯৭৩ সালে ২৯৩টি আসন পেয়েছিলো এবং পরবর্তিতে আমরা দেখলাম এই ৩০ ডিসেম্বরের তথাকথিত নির্বাচনে আবারো ২৯৩টি আসন। চমতকার। এই ধরনের সমীকরণ বিএনপির করার যোগ্যতা নাই, আমরা এসব ভোট জালিয়াতির দক্ষমতায় পারদর্শি নই, আমরা এটা কখনো করিনি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে কোকোর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্মৃতি সংসদের শামীম তালুকদার, শাহিন খন্দকার, রেজাউল করীম রেজাসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আলাল বলেন, একাদশ নির্বাচনে শুধু বিএনপি পরাজিত হয়েছে তা নয়। এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে দেশের জনগণ, গণতন্ত্র। এই নির্বাচনে দেশকে একটি অন্ধকারের দিকে ধাবিত করা হয়েছে। দেশে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় সৃষ্টি করা হয়েছ। ইতিহাস হয়তো একদিন সত্য প্রকাশ করবে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!