DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

দিনে ব্যবসায়ী রাতে ডাকাত

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  প্রদীপ পোদ্দার। বয়স প্রায় ৪১। গজীপুরের টঙ্গীতে একটি জুয়েলারি দোকানের মালিক তিনি। এ ব্যবসার আড়ালেও তার ভয়ঙ্কর একটি পরিচয় রয়েছে। দিনে পরিচয় ব্যবসায়ী হলেও রাতে তার পরিচয় হয়ে যায় ভিন্ন। তিনি সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্রের সর্দার। চক্রটিকে পরিচালনা করেন তিনি। তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা রাতের অধারে চুরি ডাকাতি করে স্বর্ণালঙ্কার তার কাছে অল্পমূল্যে বিক্রি করতো। পরবর্তীতে তিনি তার স্বর্ণের দোকান গ্রহকদের কাছে বিক্রি করতেন। যদি কখনও চক্রের সদস্যরা ধরা পড়লে বা গ্রেফতার হলে তাদের আইনি সহায়তার জন্য উকিলও ঠিক করে দিতেন চক্রের মূলহোতা প্রদীপ পোদ্দার। অবশেষে প্রদীপ পোদ্দারকে আটক করে র‌্যাব। গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রদীপসহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ছয় সদস্য গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। গ্রেফতার অন্যরা হলেন- দুলাল হোসেন, রাসেল, জাকির হোসেন, কোকিলা বেগম ও হাজেরা বেগম। এদের মধ্যে প্রদীপ এই ডাকাতচক্রের মূল হোতা বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক সারওয়ার বিন কাশেম এ তথ্য জানান। তাদের কাছ থেকে পাঁচ ভরি সোনার গয়না, চারটি মোবাইল সেট এবং ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করার কথা জানানো হয় র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।

র‌্যাব অধিনায়ক সারওয়ার বলেন, কয়েক দিন ধরে খবর আসছিল উত্তরা ও টঙ্গীর বিভিন্ন বাসায় ও দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে ওই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার প্রদীপ পোদ্দার এই ডাকাতচক্রের হোতা। টঙ্গীর আলতাব প্লাজার পোদ্দার জুয়েলারির মালিক তিনি। প্রদীপ জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে ১০/১২ জন ডাকাত পালতো এবং ডাকাতির মালামাল ওই দোকানে রেখে বিক্রি করত। দলের কেউ গ্রেফতার হলে উকিল আর তার সংসারর খরচও প্রদীপ দিত।

সংবাদ সম্মেলনে সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, গ্রেফতার দুলাল পেশায় একজন কাপড় ব্যবসায়ী। সে উত্তর বাড্ডা থেকে গার্মেন্টস পণ্য কিনে গাজীপুর ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে বিক্রি করতো। এই সুযোগে বিভিন্ন বাসায় ঢুকে বাসার সদস্যদের গতিবিধি লক্ষ করতো। বাসার দরজা ভেঙে চক্রের অন্য সদস্যদের সহায়তায় ডাকাতি করতো এবং মালামাল লুট করে নিতো।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে টঙ্গীর একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুলালকে দেখা গেছে। দুলাল এর আগেও একাধিকবার গ্রেফতার হন এবং প্রায় আড়াই বছর কারাভোগ করেছিলেন। এরপর জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজ শুরু করেন। চক্রের অপর সদস্য রাসেল ও জাকির তার সঙ্গে অসংখ্যবার চুরি-ডাকাতির কাজে অংশ নেন। এদিকে দুলালের স্ত্রী কোকিলা এবং দুলালের মা হাজেরা ডাকাতির মালামাল নিজেদের কাছে সংরক্ষণ করে রাখতো। এই চক্রের আরও সদস্য রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!