DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ব্যবসায়ীকে অপহরণের চেষ্টা : ৫ ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ   বগুড়ায় গ্রেফতারের নাটক সাজিয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে পাঁচ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে গিয়ে জনতার হাতে গণপিটুনি খেয়েছে ৫ ভুয়া ডিবি পুলিশ। জনতার সহায়তায় থানা পুলিশ ওই পাঁচজন ভুয়া ডিবি পুলিশসহ তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি আটক করেছে।

এসময় টাকাসহ জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) নামে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। জাহাঙ্গীর উপজেলার দমদমা গ্রামের তফির উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নন্দীগ্রামে উপজেলার চাকলমা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণের চেষ্টায় আটককৃত পাঁচ প্রতারক হলো- শরীয়তপুর জেলার সখিপুর উপজেলার কানুইঘুঘু সাহেবের বাড়ি এলাকার নুরুল হকের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩৫), টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের হলুদিয়াঘাটা এলাকার মৃত তছলিম উদ্দিনের ছেলে সুরুজ (২৭) (মাইক্রোবাসের চালক), ঝালকাঠি জেলার নলছিটি এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে সুমন হোসেন (২৮), ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নবীনগর কানিকানা এলাকার আরজ মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (৪০) ও বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বালিয়া গ্রামের ইউসুফ হোসেনের ছেলে শাহাব উদ্দিন (৪০)। ইকবাল ও শাহাব উদ্দিন গণপিটুনিতে আহত হওয়ায় তাদেরকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

জাহাঙ্গীর জানান, তিনি ধান-চালের ব্যবসা করেন। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখায় যান। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তিনি পাঁচ লাখ ৭ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে সিএনজি চালিত একটি অটোরিকশায় ওঠেন। ওই অটোরিকশাটিতে চালকসহ আরও ৪জন আরোহী ছিল।

তিনি আরো বলেন, অটোরিকশাটি নন্দীগ্রাম উপজেলা সদরের বেলঘড়িয়া ও নামুইট এলাকার মাঝামাঝি পৌঁছালে সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষমান একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-১৯-২৯৩৮) থেকে ৩/৪জন নেমে তাদের থামার সংকেত দেয়।

তিনি বলেন,‘অটোরিকশাটি থামানোর পরপরই হাইয়েস মাইক্রোবাস থেকে নেমে আসা দু’জন আমার নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম বলার পর তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে দু’হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাদের মাইক্রোবাসে ওঠায়। এরপর তারা আমার চোখ বেঁধে ফেলে এবং মাইক্রোবাস নিয়ে দ্রুত সামনের দিকে যেতে শুরু করে।’

নন্দীগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) আনিসুর রহমান জানান, বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক থানায় ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানায়। এরপর পরই পুলিশের একটি টিম ওই দিকে রওনা হয়। ততক্ষণে অটোরিকশার চালক এবং অপর যাত্রীরা ঘটনাটি পুরো এলাকায় জানিয়ে দেয়।

এরপর পুলিশ চাকলমা এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে দুর্বৃত্তদের সেই মাইক্রোবাসটিকে থামিয়ে দেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মাইক্রোবাসে থাকা ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া ৫জন পালানোর চেষ্টা করলে জনতা তাদের ধরে গণধোলাই দিতে শুরু করে। গণপিটুনিতে আহত শাহাবুদ্দিন ও ইকবাল নামে দু’জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

নন্দীগ্রাম থানার সাব ইন্সপেক্টর চান মিয়া জানান, চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যায় তাদেরকে থানায় নেয়া হয়েছে।

নন্দীগ্রাম থানার সাব ইন্সপেক্টর আলী আকবর জানান, গ্রেফতারকৃদের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা হতে পারে।

তিনি বলেন,‘উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এজন্য মামলা দায়েরে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।’

পুলিশের নন্দীগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!