DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের বিধান নেইঃ বিপাকে হাসিনা সরকার

ziapodok

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  তড়িঘড়ি করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে হাসিনা সরকার শহীদ রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানন,বীর উত্তমের স্বাধীনতা পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষিত সেই পদকটি ২দিন আগে সড়িয়ে নেয়া হয়।কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে এই পুরস্কার বাতিল বা প্রত্যাহারের কোন বিধান নেই।

দেশের সর্বোচ্চ সরকারি পুরস্কার স্বাধীনতা পদক। এ পুরস্কার প্রদানের বিধান/নির্দেশনাবলী থাকলেও ওই পদক বাতিল করার বিধান রাখা হয়নি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চলতি বছরের ৩১ মার্চ সর্বশেষ স্বাধীনতা পদক
প্রদানসংক্রান্ত নির্দেশনাবলী সংশোধন করা হয়। এপ্রিলে তা প্রকাশ করা হয়। যার নং- ০৪.০০.০০০০.৭১২.২৩.০০২.১৫.৪০। সেখানে পুরস্কার প্রদানের জন্য কি কি নিয়ম পালন করতে হবে, কোন কোন ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে, কেমন করে পদক দেওয়া হবে, নেওয়ার নিয়ম ও নির্দেশনাবলী উল্লেখ থাকলেও বাতিল করার কিংবা প্রত্যাহার করার কোনো বিধান নেই।

তাই জিয়াউর রহমানের পদক প্রত্যাহারের বিষয়টি নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যত্যয় বলে কেউ কেউ বলছেন।
এ ব্যাপারে জাতীয় পুরস্কার প্রদানসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির একজন সদস্য বলেন, এটা নিয়মের ব্যত্যয়। কারণ পুরস্কারের জন্য ব্যক্তির সারা জীবনের অবদান বিবেচনা করতে হবে। সে হিসেবে জিয়াতো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। এ জন্য তার পদক থাকতে পারে না। এছাড়াও তার শাসনামল অবৈধ বলেও আদালতের রায় রয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, আমি পুরস্কার প্রদানের নির্দেশনাবলীর কথা বলতে পারবো না। তবে পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের উপর ভিত্তি করেই তার পুরস্কার বাতিল করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ নির্দেশাবলী অনুযায়ী ১৩টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার প্রদান করা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসাবিদ্যা, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, পল্লী উন্নয়ন, সমাজসেবা/জনসেবা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জনপ্রশাসন, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যেকোনো ক্ষেত্র।
বিদ্যমান নির্দেশাবলীতে উল্লেখিত ক্ষেত্রসমূহ অনুযায়ী পুরস্কারের জন্য প্রাথমিক মনোনয়ন প্রস্তাব আহ্বান করা হবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে অসাধারণ অবদান রেখেছেন এমন সীমিতসংখ্যক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হবে। সামগ্রিক জীবনের কৃতিত্ব গুরুত্ব পাবে।
আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলে কোনো বছর এ পুরস্কার প্রদানের সংখ্যা বাড়াতে কিংবা কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এক বছরে দশটির বেশি পুরস্কার হবে না। কেবল বাংলাদেশের নাগরিক ও প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। বলা হয়েছে, স্বাধীনতা পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, তিন লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র পাবেন।
আরও বলা হয়েছে, পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তি গোষ্ঠী/প্রতিষ্ঠান/সংস্থা পুরস্কার গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বা নির্দিষ্ট তারিখে পুরস্কার গ্রহণের ব্যাপারে না জানালে তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে না।

তারা পুরস্কার নিতে রাজি না হলে পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে বিবেচিতও হবেন না। তালিকায়ও কোনো নাম থাকবে না।
কোনো ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য মৃত ব্যক্তিকে চূড়ান্তভাবে (মরণোত্তর) মনোনীত করা হলে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে পুরস্কার নেওয়ার জন্য তার উত্তরাধিকারী খুঁজে পাওনা না গেলে তার পুরস্কারটি জাতীয় জাদুঘরে প্রেরণ করা হবে। তবে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান/সংস্থার পেশাগত ও ব্যক্তিগত সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের কাছে পুরস্কার প্রদান করা যাবে। তাদের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে তা নিতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, স্বাধীনতা পদক প্রদানের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরের বছরের জন্য প্রস্তাব আহ্বান করে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে এবং আগে যারা এ পুরস্কার পেয়েছেন তাদের কাছে পাঠাবেন।
মন্ত্রণালয়/বিভাগ নিজ নিজ কার্যসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পুরস্কারের জন্য ও যারা এর আগে পুরস্কার পেয়েছেন তারাও বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য প্রস্তাব করতে পারবেন।
পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব নির্ধারিত ছকে পূরণ করে ৩০ কপি ফটোকপি করে নভেম্বরের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে।
প্রাপ্ত প্রস্তাব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি যাচাই-বাছাই করে প্রস্তাবগুলো জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
আরও বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার দেওয়া হবে।
কেউ বিদেশে থাকলে তার জন্য ইকোনমি ক্লাসের বিমান ভাড়া, তিন দিনের থাকা খাওয়ার ভাতা পাবেন। অন্য জেলায় থাকলে তারাও রেল/বাস ভাড়াসহ এ সুবিধা পাবেন। জেলা প্রশাসক/দূতাবাস এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন। মন্ত্রিপরিষদের বাজেট বরাদ্দ থেকে দেওয়া হবে। সময় ও ভাড়া বিবেচনা করে এটা নির্ধারণ করা হবে।
মরণোত্তর পুরস্কারের ক্ষেত্রে ও পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি অনিবার্র্য কারণবশত: থাকতে না পারলে তার স্ত্রী, সন্তান কিংবা উত্তরাধিকারীগণ উপস্থিত থেকে পুরস্কার নিতে পারবেন।
যতি পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/উত্তরাধিকারী বিদেশে অবস্থান করেন সে ক্ষেত্রে ওই দেশের বাংলাদেশের দূতাবাস এ পুরস্কার দিবেন সেই সঙ্গে তারা পুরস্কারের টাকাও দিবেন। এ জন্য অনুষ্ঠান করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দূতাবাসকে টাকা দিবে।
যদি তারা এমন দেশে অবস্থান করেন যেখানে দূতাবাস নেই সেখানে হলে বীমাকৃত ডাকযোগে ও অন্য কোনো অননুমেদিত পদ্ধতির মাধ্যমে পুরস্কার তার কাছে পাঠানো যাবে। পুরস্কারের টাকা বাংলাদেশি টাকার পরিমাণে মার্কিন ডলার কিংবা ওই দেশের মুদ্রায় দেওয়া যাবে। নতুন নির্দেশনা জারি করার সঙ্গে সঙ্গে এর আগের যে নির্দেশাবলী ছিল তা বাতিল করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার/স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত ইতোপূর্বে জারিকৃত নির্দেশাবলী এত দ্বারা বাতিল/ সংশোধন করা হলো।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!