DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বাল্যবিয়ে: পাকিস্তানী স্বভাব ধরে রাখলেন শোয়েব আখতার

Capture18-300x225শোয়েব আখতারকে বাল্যবিবাহ থেকে দূরে রাখতে নানামুখী চাপ প্রয়োগ করেও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে নিজের থেকে ২০ বছর কনিষ্ঠ এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারীকে বিয়ে করে বিশ্বসংবাদ হয়েছেন তিনি। এর আগে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক নারীকে বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগ উঠলে শোয়েব আখতার বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

শেষমেশ তিনি ঘরোয়াভাবে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের হরিপুর এলাকার এক ধনকুবেরের মেয়েকে বিয়ে করেছেন।



পাকিস্তানের বর্তমান আইন অনুসারে শোয়েব আখতার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তবে বাল্যবিবাহ পাকিস্তানীদের স্বভাবজাত হওয়ায় তাকে কোন রকমের শাস্তিরই মুখোমুখি হতে হবে না। পাকিস্তানের পুরুষদের বাল্যবিবাহ থেকে দূরে রাখতে দেশটির আইনজীবীদের একটি অংশ চাইছিলেন বাল্যবিবাহের শাস্তি বৃদ্ধি করতে।

বর্তমানে পাকিস্তানে কেউ বাল্যবিবাহ করলে তাকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও ৭০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়। কিন্তু সংস্কারকামী আইনজীবীরা চাইছিলে শাস্তি বাড়িয়ে দুই বছর কারাদণ্ড ও ৭০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিতে। কিন্তু পাকিস্তানের অন্যান্য আইনজীবী ও ধর্মীয় নেতাদের বিরোধিতার কারণে সেই উদ্যোগ এখনও সফলতার মুখ দেখেনি।



শোয়েব আখতারের মত অন্যান্য পাকিস্তানের পুরুষদের বাল্যবিবাহ থেকে দূরে রাখতে কোথাও কোথাও ব্যাপক সক্রিয় থাকতে হয় দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। করাচী শহরে প্রায়ই বিয়ের অনুষ্ঠানেও হানা দিয়ে বাল্য বিবাহ ঠেকানর ঘটনা ঘটে প্রায়। এ সকল কারণে পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতারা বাল্যবিবাহ বিরোধী আইনের সর্বোচ্চ বিরোধিতা করছেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ইসলামিক ইডিওলজির ধর্মগুরুদের যুক্তি, ইসলামে বাল্যবিবাহ হালাল। নয় বছর হলেই একজন বালিকাকে বিবাহ দেওয়া যায়। তাই, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কোন আইন করলে তা ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ হবে। কাউন্সিল অন ইসলামিক ইডিওলজি পাকিস্তানের সাংবিধানিক সংস্থা। এর কাজ হচ্ছে রাষ্ট্রকে ধর্মীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া।



কিন্তু বাল্যবিবাহ বিরোধী আন্দোলনকারীরা বলছেন, কেবল বাল্যবিবাহ নয়, কাউন্সিল অন ইসলামিক ইডিওলজিও নিষিদ্ধ করা উচিত। কোন গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে কাউন্সিল অন ইসলামিক ইডিওলজি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেনাশাসক আইয়ুব খান কাউন্সিল অন ইসলামিক ইডিওলজি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল ইসলামকে ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতায় টিকে থাকার পথ খোলা রাখা।



আন্দোলনকারী রুবিনা সেইগলের মতে, বাল্যবিবাহ হচ্ছে ধর্ষণের মতো অপরাধ। একজন নারী ১৮ বছর বয়স্ক হলেই কেবল তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে। তবে, যে কোন পরিস্থিতিতে একজন নারীর সম্পূর্ণ সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না।



এত আন্দোলন সত্ত্বেও পাকিস্তানে বাল্যবিবাহ মহামারি আকারে বিদ্যমান আছে। দেশটিতে বাল্যবিবাহের প্রকৃত তথ্য পাওয়া না গেলেও হাতের কাছে পাওয়া তথ্যই ভয়াবহ। ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে পাকিস্তানের ২৪ ভাগ নারীরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে। দেশটির সিন্ধু প্রদেশেে বাল্যবিবাহের এই হার ত্রিশ ভাগ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!