DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

মিরপুর বিহারি ক্যাম্পে সংঘর্ষে নিহত ১০জনঃস্থানীয় এমপির মদদে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

image_95848_0আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পল্লবীর কালশীর বিহারিপল্লীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একই পরিবারের নয় জনসহ ১০ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই যমজসহ একাধিক শিশুও রয়েছে। এরা গুলিতে ও আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে।

মিরপুর জোনের ডিসি ইমতিয়াজ আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিহারিরা প্রথমে লাশ হস্তান্তরে অস্বীকার করলেও বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের হাতে দেয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রূপনগর থানার এসআই জুবায়েরের বাম উরুতে গুলি লেগেছে বলে জানান তিনি। 

এছাড়া, চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক শফিউল হাসানকে বিহারিরা মারধর করেছে বলেও জানা গেছে।

একই পরিবারের নয় জন হলো- কুর্মিটোলা ক্যাম্পের আই ওয়ান লাইন ঘরের বেবী আক্তার (৪৫), বেবীর তিন মেয়ে শাহানা (২৫) ও আফসানা (১৮), রোকসানা (১০), বেবীর ছেলে আশিক (২০), আশিকের বউ শিখা (১৮), যমজ দুই ভাই লালু ও ভুলু (১৪), ও বেবীর নাতি মারুফ (২)। 

এছাড়া পুলিশের গুলিতে আহত আজাদকে (৪৫)  বেলা সাড়ে ১১টার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

আজাদ বাদে নিহত বাকিদের লাশ বিহারি ক্যাম্পের ভেতরে পাকিস্তানি এসপিজিআরসি অফিসের ভেতরে রাখেন বিহারিরা। পুলিশ লাশ উদ্ধারের জন্য বেশ কয়েকবার রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস ছোড়ে। অবশেষে বিকেল ৩টার দিকে লাশ হস্তান্তরে রাজি হন তারা।

বিহারিদের অভিযোগ, লালমাটিয়া বাউনিয়া বস্তির লোকজন শনিবার সকাল ৮টার দিকে তাদের ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে।  

আনোয়ার ও নূর আলম বলেন, সকালে কালশীতে আতশবাজি ফাটানো হচ্ছিল। এসময় বাউনিয়া বস্তির ৩ থেকে ৪শ লোক তাদের ধাওয়া দেয় ও বিহারি ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এর কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।

আগুনে আনোয়ারের চায়ের দোকানসহ বিহারি ক্যাম্পের মোট আটটি ঘর পুড়ে গেছে।

বিহারিদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পল্লবী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাপ্পীর নেতৃত্বে তৈইল্লা জাহিদ, নুরা ও পেট কাটা সুমন অগ্নিসংযোগ করে।’বিহারীরা ঢালাওভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী এমপি জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন এবং শুধুমাত্র তাদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এটা করা হয়েছে বলেছেন।

পুলিশের সহযোগিতায় হামলা চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।

কাউনিয়া বস্তির লোকেরা আগুন লাগানোর অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করছেন, ওই বিহারি ক্যাম্পে আতশবাজি তৈরি ও বিক্রি করা হয়। এ কারণে শনিবার সকালে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ অভিযানের সময় পুলিশের ওপর হামলা করে বিহারিরা। এ সময় তারা পুলিশকে সাহায্য করতে এগিয়ে যান।  

পুলিশ বলছে, বিহারি ক্যাম্পটিতে চার-পাঁচটি গ্রুপ রয়েছে। নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ লেগে থাকে। এ বিরোধ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

ডিসি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ওখানে বেশকিছু গ্রুপ রয়েছে। শবে বরাতের আগের রাতে ওই ক্যাম্প থেকে বেশ কজনকে আটক করে পুলিশ। এরমধ্যে হয়তো কোনো পক্ষের লোক বেশি ধরা পড়েছে। হতে পারে, এ কারণে ওই পক্ষের লোকেরা অন্য পক্ষের ওপর হামলা চালায়।’  

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঢাকা জেলা প্রশাসক তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দুই পক্ষের মারামারিতে নয়জন মারা গেছেন। এ ঘটনায় প্রশাসনের দুর্বলতা থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!