DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

তিস্তার হিস্যা আদায়ে লড়ব : ফখরুল

51_Fakhrul_Press+Club_31071ভারতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের সবার নীতি একচোখা’— এমন মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আদায়ে তার দল লড়াই করবে।

রবিবার রাজধানীর পূর্বাণী হোটেলে বিএনপি আয়োজিত ‘তিস্তার পানি বণ্টন: প্রেক্ষিত বাংলাশে’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই বলেন তিস্তার পানি নিয়ে আলোচনার সময় এখন নয়। ভারতের নির্বাচনের জন্য আমাদের বসে থাকার সুযোগ নেই।

বিএনপি মনে করে ভারতের সব শাসক গোষ্ঠী বাংলাদেশকে একই চোখে দেখে। নিজেদের স্বার্থে বাংলাদেশের ক্ষতি হলেও তা নিয়ে তারা ভাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আজকে লড়াই দুই বিষয়ে। একটি হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা। আরেকটি হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে নদীর বিষয়গুলো তুলে ধরা।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা ভাগাভাগির জন্য নয়, জনগণের কল্যাণের জন্য। এ সব নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো চিন্তা নেই। কারণ তারা জনগণের সমর্থনে ক্ষমতায় আসেনি। যাদের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে আছে, তাদের খুশি করতেই কাজ করছে। তিনি বলেন, ভারতের সরকার কখনই বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের কথা ভাববে না। তারা তাদের জনগণের কথাই ভাববে। বাংলাদেশের মানুষের কোনো মূল্যই তাদের কাছে নেই।

এ জন্য ভারতের নির্বাচনে কে ক্ষমতায় আসবে, কে আসবে না, তার জন্য আমাদের বসে থাকলে চলবে না। তিস্তাসহ আমাদের যেসব দাবি আছে, সেগুলো নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, তারা ভারতের কাছ থেকে কোনো কিছুই আদায় করতে পারবে না।

ভারতের প্রতি অতিরিক্ত প্রেমে গদগদ হয়ে তারা সব উজাড় করে দিয়েছে। এখন তিস্তা বা অন্যান্য ইস্যুতে দর-কষাকষির কোনো হাতিয়ার আমাদের কাছে আর নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান শাসকেরা তিস্তা, সীমান্ত চুক্তি এ বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তিত নয়। কারণ, তারা এ দেশের জনগণের আস্থার সরকার নয়। তারা কেবল ওই দেশের সমর্থনেই টিকে আছে। তাই তাদের খুশি করতেই কাজ করে যাচ্ছে।’ ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া বিএনপির তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ প্রসঙ্গে দলটির মুখপাত্র বলেন, এই লংমার্চের দুটি দিক রয়েছে। এ দুটি দিক বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে লড়াই করতে হবে। প্রথমত, দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ওই সরকার ভারতের সঙ্গে আমাদের যে নদীগুলো রয়েছে, সে নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরবে। তার আশা, তাদের আন্দোলন অব্যাহত আছে এবং তা সফল হবে। তিনি বলেন, এই কর্মসূচি ঘোষণা পর সরকারের অনেক মন্ত্রী তিস্তা লং মার্চ নিয়ে বিএনপির কল্পিত সন্ত্রাসের কথা বলে আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখছেন। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, বিএনপির লং মার্চ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, জনকল্যাণে নেয়া হয়েছে।

জনগণকে উজ্জীবিত করে ‘আন্তর্জাতিক নদীর পানি প্রবাহ বন্ধের আগ্রসন’ মোকাবিলা করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ সিপিবির লং মার্চে দলটির সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খানের দেয়া বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘শনিবার তিনি বলেছেন, অতীতের সব সরকারের নতজানু নীতির কারণে পানি ন্যায্য হিত্সা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। তাকে বলতে চাই, মঞ্জুরুল আহসান সাহেবের ওই বক্তব্য বিএনপির জন্য প্রযোজ্য নয়।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই পদ্মা নদীর পানি প্রবাহের বিষয়টি প্রথম জাতিসংঘের তুলেছিলেন। এজন্য ৭৭ সালে পদ্মা নদীর পানি চুক্তিতে গ্যারেন্টি ক্লজ সংযুক্ত করা হয়েছিল। ‘৭৬ সালের পানি চুত্তিতে তা ছিল না। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আমি পানিসম্পদ মন্ত্রী হিসেবে তিস্তা নদীর পানি সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছিলাম।’ গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাসুদ আরিফ প্রমুখ। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!