DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সিলেটে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরনে অগ্রনী আলেমসমাজ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  সিলেট ও সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যায় বন্যার্ত মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে সবার আগে এগিয়ে এসেছেন দেশের আলেম সমাজ। সঙ্কটাপন্ন মানুষের পাশে আলেমদের দাঁড়ানোর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অন্যদিকে এবারের ত্রাণ কার্যক্রমে কথায় কথায় আলেম সমাজের সমালোচনা করা, তাদের চরমপন্থী হিসেবে উপস্থাপনকারী সেকুলারদের দেখা মেলেনি। এনিয়েও ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

আলেমদের তত্ত্বাবধানে স্বেচ্ছাসেবীরা কয়েকদিন ধরে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সিলেটের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, সংস্থা ও অনেক মানবহিতৈষীও এগিয়ে এসেছেন। তবে আলেমরা এগিয়ে এসেছেন সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে। তাদের সেবাগুলো মানুষের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।

বন্যার পানিতে দিশেহারা সুনামগঞ্জ ও সিলেটের মানুষ। কয়েকদিন থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন এখানকার মানুষ। বন্যার ভয়াবহতা বাড়তে থাকায় সারাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলা দুটি।

এমন পরিস্থিতিতেও গলাপানি অতিক্রম করে সেখানে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন আলেম সমাজ। পানি পেরিয়ে বানভাসি মানুষগুলোর কাছে খাবার হাতে দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে গেছে জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, খেলাফত মজলিশ, চরমোনাই পীরের ইসলামি আন্দোলন, ইসলামি ঐক্যজোট। এছাড়া সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বন্যার্ত জেলাগুলোর হাজার হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন মাওলানা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, শায়খ আবদুর রাযযাক বিন ইউসুফ।

আলেম সমাজের সমালোচক গণজাগরণ মঞ্চ কিংবা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির (ঘাদানিক) কাউকেও ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এদের অনেকেই ফেসবুকে পোস্ট দেয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। এছাড়া তারা নামেমাত্র ঢাকায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছেন বলে জানা যায়।

এদিকে, আলেমদের নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা বিতরণের ক্ষেত্রে সেবাগ্রহীতার মান-মর্যাদা ও সৌজন্যতার নানামাত্রিক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। সেবাগ্রহীতার ছবি প্রচার থেকে নির্মোহ থেকে সঙ্কটগ্রস্ত মানুষকে খাবারের প্যাকেজ পৌঁছে দেওয়া প্রশংসা কুড়িয়েছে।

আলেম সমাজের প্রশংসা করে আব্দুল আলিম নুমান লিখেছেন, ‘‘জাতির ক্রান্তিকালে দুর্যোগে এবং দুর্ভোগে যেভাবে আপনারা অগ্রগামী, আলেমুল গায়েব মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে আপনাদের নাম ও কীর্তি সোনার হরফে খচিত হোক।

তিনি আরও লেখেন, আমার মতো কোটি ভক্তের হৃদয়ের টাইমলাইন জুড়ে ছড়িয়ে থাকুক অসামান্য কৃতজ্ঞতায়, শ্রদ্ধায় ও রক্তিম ভালোবাসা আপনাদের প্রতি।

এইচ এম আব্দুল্লাহ নামে একজন লিখেছেন, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে দেশের আলেম সমাজই এগিয়ে। আবারও প্রমাণ হলো আলেমরা সব সময় সবার আগে জনগণের পাশে দাঁড়ায়।

আকলিমা জাহান নামে একজন লিখেছেন, জাতির ক্রান্তিকালে আলেম সমাজই সবার আগে দাঁড়িয়েছেন। মহান আল্লাহ তাদের হেফাজত করুক।

নুর-ই আলম হাওলাদার নামে একজন লিখেছেন, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরীর নাম গণকমিশনের শ্বেতপত্রের এক নাম্বারে দিয়েছিল তারা। অথচ তিনি আর্ত-মানবতার সেবায় ব্যস্ত। প্রতিদিনই নৌকায় করে তিনি সিলেটবাসীকে ত্রাণ দিচ্ছেন। মহান আল্লাহ হুজুরের ছায়াকে আমাদের মধ্যে দ্বীর্ঘায়িত করুন!

তিনি আরও লেখেন, অথচ ঐসব ঘাদানিকদের সিলেট ও সুনামগঞ্জের কোনো জায়গায় খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। তারা এখন কোথায় জনগণ জানতে চায়।

মো. জামির উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, বন্যার শেষে যদি কখনো তোমার সুবুদ্ধির উদয় হয় তবে স্মরণ রেখো, হাত বাড়িয়ে ছিল মোল্লারা, গণকমিশনের লোকেরা নয়।

তিনি আরও লেখেন, প্রতিটি দুর্যোগে সবার আগে এই দাড়ি-টুপি ওয়ালারা এগিয়ে আসে। সিলেটে বন্যাকবলিত এলাকায় এই পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকা এবং খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন আলেমরা।

এছাড়াও বিভিন্ন আলেমদের সংগঠন প্রতিদিনই কোনো না কোনো কিছু দান করছেন। এর পাশাপাশি ব্যারিসটার সুমন, বিভিন্ন খেলোয়াড়রা, শোবিজ তারকারাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!