DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সন্তানের সামনে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা: সাবেক আওয়ামী এমপি আউয়াল গ্রেফতার

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  রাজধানীর পল্লবীতে সন্তানের সামনে প্রকাশ্যে সাহিনুদ্দিনকে (৩৩) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

আজ বৃহস্পতিবার গনমাধ্যমকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাবের ইন্টেলিজেন্স (গোয়েন্দা) উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

এম এ আউয়ালকে ভৈরব থেকে গ্রেফতার করা হয়।  তিনি সাহিনুদ্দিন হত্যার মূলপরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার ১নং আসামি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বিকাল ৪ টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফ করবে র‌্যাব। 

রাজধানীর পল্লবীতে সুমন বাহিনীর বিরুদ্ধে মায়ের জিডির পরই কুপিয়ে হত্যা করা হয় ছেলে সাহিনুদ্দিনকে।  প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে তাকে কোপানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় এর আগে দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাবেক এমপি এমএ আউয়াল, সাবেক মেজর মোস্তফা কামাল, সুমন বাহিনীর সুমন, তাহের, মানিক, ন্যাটা সুমনসহ বেশ কয়েকজনকে যে কোনো সময় গ্রেফতার করতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ বিষয়ে র‌্যাব ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম  বলেন, মামলাটি পুলিশ তদন্ত করলেও আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ছায়াতদন্ত করছি। সরকার দলীয় সাবেক এমপি আউয়াল এবং সাবেক মেজর মোস্তফা কামালসহ বেশ কয়েকজনকে আমরা নজরদারিতে রেখেছি।  তারা যেকোনো সময় ধরা পড়বে। সাহিনুদ্দিন হত্যায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।

গত ৭ ডিসেম্বর গনমাধ্যমে ‘পল্লবীতে ভয়ংকর সুমন বাহিনী/প্রতিবাদ করলেই কুপিয়ে জখম’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়েছিল।  ওই সময় এক মাসের ব্যবধানে সুমন বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়।  কিন্তু তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠে এই বাহিনী।  অন্যদিকে বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হতে থাকে।  সর্বশেষ ১১ মে আকলিমা নামের এক নারী পল্লবী থানায় সুমন বাহিনীর সুমনসহ ছয়জনকে আসামি করে জিডি করেন।

জিডিতে সুমন ছাড়া আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে হ্যাভিলি প্রপার্টিজের স্বত্বাধিকারী ও সাবেক এমপি এমএ আওয়ালও আছেন। জিডিতে আকলিমা আশঙ্কা করেন, যে কোনো সময় তার ছেলে সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করা হতে পারে। এই আশঙ্কার পাঁচদিনের মাথায় রোববার প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের পর মুরাদ ও টিটু নামের দুজনকে গ্রেফতার করে দুদিনের রিমান্ডে নেয় পল্লবী থানা পুলিশ।  রিমান্ড শেষে আজ তাদের আদালতে হাজির করা হবে। 

চাঞ্চল্যকর এই হত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সুমন বাহিনীর সদস্য মনির ও মানিক রামদা দিয়ে সাহিনুদ্দিনকে একের পর এক কুপিয়ে যাচ্ছে।  আশপাশ থেকে ভেসে আসছে চিৎকার-কান্না।  মাটিতে লুটিয়ে ছটফট করতে করতে বাঁচার আকুতি জানান সাহিনুদ্দিন।  সাহিনের হাত-পা, গলা, মুখ, পেট, ঊরু, মাথা, হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলাপাতাড়ি কোপানো হয়।

কিছুক্ষণ কুপিয়ে মানিক চলে গেলেও মনির কুপিয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে গলায় কুপিয়ে কুপিয়ে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করার পর স্থান ত্যাগ করে মনির।
 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!