DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আন্দোলনের অংশ হিসাবে নির্বাচনে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

 

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জোট গঠিত হওয়ার প্রায় এক মাসের মাথায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নাটকীয় সিদ্ধান্ত জানাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ঐক্যফ্রন্ট একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া তফসিল বাতিল করে তা এক মাস পিছিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবিও জানিয়েছে জোটটি।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এ জোটের আরেক নেতা ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ন্যূনতম শর্তও পূরণ হয়নি। বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচার আচরণবিধির লঙ্ঘন। ইভিএম বিরুদ্ধে আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তা বাতিল হয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রায় অসম্ভব। এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

লিখিত বক্তব্য পাঠের আগে কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবিধানের মৌলিক বিষয় ও মূল্যবোধ রক্ষার জন্য এ ঐক্য গঠন করা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা। আশা করি এ ঐক্যবদ্ধ শক্তি নির্বাচনে জনগণের আস্থা অর্জন করে জনগণের মালিকানা কায়েম করবে।’ 
সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি না হলে ঐক্যফ্রন্ট ভিন্নপথে হাঁটবে কিনা -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রত্যেকদিনই অবস্থার মূল্যায়ন করা হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আন্দোলনও চলতে থাকবে।

ঐক্যফন্টের সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের গেলে দলীয় প্রতীকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন জানান, প্রতীকের বিষয়ে পরে জানানো হবে। 
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতাকে গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু সরকারি দলের মধ্যে সমঝোতা করার মানসিকতা দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী সভা-সমাবেশে বিধি-নিষেধ না থাকা, হয়রানিমূলক মামলা না করার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও তা পূরণ করা হয়নি। রাজশাহীর সমাবেশের আগে রাজশাহী গামী বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক নেতা-কর্মীদেরও গ্রেপ্তার করা হয়।

তফসিল পেছানোর ঘোষণা পেছানোর দাবি করে ইসিকে চিঠি দিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর, বাছাইয়ের তারিখ ২২ নভেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। 


এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের আগেই নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রধান দুই অংশীজন একমত হলে তফসিল পিছিয়ে দেওয়া হবে। তবে তবে এরপরও তা করা হয়নি। সরকারি দলের তফসিল পেছানোর আহ্বান না জানানো ও নির্বাচন কমিশনের তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রমাণ করে সরকার কোনো সমঝোতা চায়নি। সরকার ২০১৪ সালের মতো আরও একটি নির্বাচন করতে চায় বলে মনে করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সাত দফা দাবি থেকে সরে আসেনি জানিয়ে ঐক্যফ্রন্ট বলেছে, সাত দফার বর্তমান তফসিল আরও এক মাস পিছিয়ে দিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ২০০৮ সালে তফসিল দুইবার পিছিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। নির্বাচনে অংশ নেওয়াকেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ ছাড়া বলা হয়, দাবি মানা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক লীগের কাদের সিদ্দিকী, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!